ধম্মইনফোধম্মইনফোধম্মইনফো
Font ResizerAa
  • গৌতম বুদ্ধের জীবনী
  • সর্দ্ধম নীতি ও শিক্ষা
  • ইতিহাস
  • সংস্কৃতি
  • সাহিত্য
  • জীবনী
  • প্রবন্ধ
  • সংবাদ
আপনি অধ্যায়ন করছেন: রক্তঝরা দিনগুলোতে: শ্রীবিশুদ্ধানন্দ মহাথের
Share
ধম্মইনফোধম্মইনফো
Font ResizerAa
Search
  • গৌতম বুদ্ধের জীবনী
  • সর্দ্ধম নীতি ও শিক্ষা
  • ইতিহাস
  • সংস্কৃতি
  • সাহিত্য
  • জীবনী
  • প্রবন্ধ
  • সংবাদ
Have an existing account? সাইন ইন
আমাদের অনুসরণ করুন
© 2022 Foxiz News Network. Ruby Design Company. All Rights Reserved.
ধম্মইনফো > Blog > ইতিহাস > রক্তঝরা দিনগুলোতে: শ্রীবিশুদ্ধানন্দ মহাথের
ইতিহাস

রক্তঝরা দিনগুলোতে: শ্রীবিশুদ্ধানন্দ মহাথের

ধম্মবিরীয়
সর্বশেষ আপডেট: January 8, 2025 2:18 am
ধম্মবিরীয় - প্রকাশক ও সম্পাদক, ধম্মইনফো
Share
SHARE

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অবস্থা এবং ভুমিকা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন। ২৫ শে মার্চ থেকে ১৬ই ডিসেম্বর।

মুখবন্ধ

গিরিরাজ হিমালয়ের হিমবাহু বন্ধন থেকে পলাতকা গঙ্গা-ব্রক্ষপুত্রের মহামিলনে ঘটেছিল কোন এক মহালগ্নে। তাদের এই সঙ্গম শ্রান্তি ও ক্লেদ মহাসাগরের নীল মহাস্নানে ধুয়েমুছে নেওয়ার ক্ষণেই মহাসাগরের বুকে ভেসে উঠেছিল বিশ্বের অদ্বিতীয় কৃষিভূমি, আমাদের এই দেশ। এই সোনার বাংলা। সুজলা সফলা শস্য শ্যামলা এ দেশ শত শতাব্দীর মহানিদ্রা ঘোর ছেড়ে বৌদ্ধ পালযুগের বৌদ্ধ বাংলাই গর্ব সমুন্নত শিরে হয়ে দাঁড়িয়েছিল,-সিংহল, শুমাত্রা-জাভা, সুবর্ণভূমি ও সুবর্ণদ্বফিবাসীর মহাতীর্থ ক্ষেত্র এবং এটা ইতিহাসের সাক্ষ্য। বৌদ্ধ বাংলার চরম বেদনাকর বিয়োগান্ত পরিণতির ধারা বেয়ে দাসত্বের জিঞ্জিরের নির্মম লৌহ নিষ্পেষণে জর্জরিতমুমূর্ষুবাংলা ও বাঙ্গালীরধর্ম, সভ্যতা, ভাব- ভাষা–সংস্কৃতি ও কৃষ্টি পুনরুজ্জীবনের প্রথম বলিষ্ঠ পদক্ষেপ শুরু হয় ১৯০৫-১৯০৬ সালে বঙ্গ- ভঙ্গ আন্দোলনের অবয়বের বুকে স্বাধীনতার স্বপ্ন- সাধ নিয়ে। বিপ্লবী বাংলার মন ও মানসের সীমাহীন দ্যোতনা ভাঙ্গার পূজারী বেশে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, দেশ প্রিয় যতীন্দ্র মোহন ও নেতাজী সুভাষের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে পূর্ণ পরিণতির পথে বেগবতী হয়ে উঠেছিল বটে, কিন্তু অবাঙ্গালীর দল বিদেশি, বিজাতি বিধর্মী বেনিয়ার অনুকম্পা আশীষ ও সক্রিয় সহযোগিতা পুষ্ট হয়ে বাংলার স্বপ্ন সাধের ভ্রনাবয়বকেই করে দিয়েছে শ্বাসরুদ্ধ।

Contents
মুখবন্ধরক্তঝরা দিনগুলোতে

অস্থিচর্মসার নাভিশ্বাসগ্রস্ত বাংলার সাড়ে সাত কোটি বাঙালি হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সন্তান দল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বজ্র কণ্ঠের আহ্বানে ভাঙ্গার পূজারীর বেশে মৃত্যুঞ্জয়ী সংকল্প গ্রহন করলে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের গভীর নিশিথে বাংলার প্রাণকেন্দ্র ঢাকায় নিদ্রায় মগ্ন শত শত বাঙ্গালীর জীবনে নেমে আসে চির নিদ্রা। শুরু হয় উন্মুক্ত তরবারি হাতে অত্যাচারীর উম্মাদ নর্তন- কুর্দন। শুধু শহরে বন্দরে নয়, গ্রাম বাংলার হাজার হাজার পল্লীর হাটে- ঘাটে- মাঠে চলতে থাকে হত্যা, লুণ্ঠন, নারী হরণ, ধর্ষণের কালো বিভীষিকা। সবুজ বাংলার অফুরন্ত শ্যামলিমা হয়ে উঠে মুক্তিপাগল অবুঝ বাঙ্গালীর তাজা খুনে লালে লাল।

বৌদ্ধ জম্বুদ্বীপের হতাবশিষ্ট মুশ্তিমেয় বাঙ্গালী বৌদ্ধ সন্তানদলওঅত্যাচারীর উদ্যত- কৃপাণের কবল থেকে রক্ষা পায় নি। এর চরম সংকট মুহূর্তে ঢাকার কমলাপুর বৌদ্ধবিহারেরশ্রদ্ধেয় শ্রীবিশুদ্ধানন্দ মহাস্তবিরের প্রাণও কেঁপে উঠেছিল মৃত্যু- মুখোমুখি অসহায় মানুষের জন্য। বলতে দ্বিধাবোধ করবো না, কমলাপুর বৌদ্ধ বিহার রুপ মধুচক্রের চারিদিকে মধুলোভীদের যেসব ছাই সর্বাধিক গুঞ্জন তুলতো, দেশের মৃত্যুসংকটক্ষণে পাওয়া যাচ্ছে না তাদের টিকির সন্ধানও। এ গভীর বিয়োগান্তক্ষণেও কর্মবীর বিশুদ্ধানন্দ ভেঙ্গে নুয়ে না পড়ে চরম পিচ্ছিল পথে দৃঢ় পথে যে যাত্রা শুরু করে ছিলাম ‘রক্তঝরা- সহযোগিতার জন্য তিনি আমার প্রতি যে ভাব ও মন নিয়ে মৈত্রীর হস্ত প্রসারিত করে ছিলেন তা গ্রহণ করেছি অতীতের সব দুঃখ বেদনাকে দুঃস্বপ্নের ছায়ার ন্যায় ধুয়ে- মুছে দিয়ে; পরিস্থিতির সর্বনাশা পরিধি ও গভীরত্ব উপলব্ধি করে এবং দেশের মানুষের প্রতি তাঁর বেদনাবিহ্বল হৃদয়ের বাস্তবরূপ চর্মচক্ষে প্রত্যক্ষ করে।


-বিশ্বেশ্বর চৌধুরী।

- Advertisement -

রক্তঝরা দিনগুলোতে

 মানব ইতিহাসের ঘৃণ্যতম অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল যে রাত্রিতে- হিটলার, নাদিরশাহ, তইমুরলঙ্গ, চেঙ্গিস খাঁকে ছড়িয়ে পরিব্যাপ্তি ঘটেছিল যার; এক মাইলেই- এর যে ঘটনা একদিন বিশ্ববাসীকে করে দিয়েছিল স্তব্ধ- বাংলাদেশে সেরকম শত শত মাইলেই সৃষ্টিকারী জঙ্গি ইয়াহিয়া সরকারের শত অপচেষ্টা ব্যর্থ করে আজ বাংলাদেশে উঠেছে নতুন সূর্য। শেই রক্তিম সূর্যের আশায় প্রাণ দিয়েছে হাজার হাজার স্বাধীনতাকামী মানুষ; ঊষালগ্নে প্রত্যাশায় অনেক কাজ করে গেছেন নেপথ্যে।

সুপরিকল্পিত পরিচালিত অধ্যায়ের শুরুতে কামান, মর্টারের শব্দে ভীতসন্ত্রস্ত আশেপাশের জনসাধারণ একমাত্র আশ্রয়স্থল হিসেবে ‘কমলাপুর বৌদ্ধ মন্দির’কে বেছে নিলো। এভাবে জমা হতে লাগলো ঢাকা নগরীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের করে লোকেরা। আমি অস্থিরভাবে পায়চারী করতে লাগলাম, ভাবছিলাম এদের কেমন করে বাঁচাবো। এ অসহায় লোকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারব কিনা। পরদিন সকালবেলা (২৬শে মার্চ, ’৭১ ইং) কমলাপুর রেইল স্টেশন থেকে এ দিকটায় শেলিং শুরু হল। হঠাৎ কয়েকটা এসে পড়লো আমাদের সীমানায়। প্রাণ হারালো মুটে- মুজুরের ছোট্ট একটি মেয়ে আর নাম না জানা দু’জন যুবক।

এদিকে দেখতে দেখতে হাজার চারেকের মত অসহায় নারী- পুরুষ- শিশু মন্দিরে জমা হলো। কেউ কেউ আবার অধিকতর নিরাপত্তার আশায় স্থানন্তরে গমন করতে লাগলো। আমি শেষ পর্যন্ত এ সমস্ত প্রানের নিশ্চয়তা বিধানকল্পে২৮শে মার্চ, ’৭১ ইং তারিখে সেক্রেটারিয়েট ভবনে তদানিন্তন চীফ সেক্রেটারী ও অন্যান্য কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মচারীর সাথে সাক্ষাৎ করতে ছুটলাম। সাথে ছিল আমার প্রিয় শিষ্য শ্রীমান শুদ্ধানন্দ ভিক্ষু ও শ্রীমান জ্ঞানদারঞ্জন বড়ুয়া। পথে বের হয়ে যে ঢাকা নগরীর দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করলাম তা চিরকাল স্মরণে থাকবে আমার। দেখলাম কামান- মর্টার সজ্জিত ঢাকার রাজপথে ইয়াহিয়ার সশস্ত্র বর্বর সৈন্যরা টহল দিচ্ছে, আশেপাশে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে আছে অগণিত লাশ। এ ছাড়া আর কোন পাবলিক কিংবা প্রাইভেট যানবাহন সেদিন আমার চোখে পড়েনি।

সেক্রেটারিয়েটে হোম সেক্রেটারীর কামরায় ঢুকে দেখলাম চারজন উচ্চপদস্থ কর্মচারী মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন, চিন্তা আর অবসাদে মুখ ভারাক্রান্ত। বৌদ্ধ মন্দিরে চার হাজারের মত আর্তেও সমাগমের কথা জানিয়ে আমি তাদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য এঁদের সাহায্য ছাইলাম। উত্তরে হোম সেক্রেটারী ম্লান মুখে জবাব দিলেন, “ আমার নিজের নিরাপত্তা যেখানে অনিশ্চিত সেখানে আপনার বৌদ্ধ সমাজ কিংবা আপনার মন্দিরে আশ্রিত লোকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করি কি করে। তা ছাড়া আমার হাতে কোন ক্ষমতাও নেই”। আমি নিরাশ হয়ে ফিরে এলাম তবে এক্কেবারে আশা ছাড়লাম না।

এপ্রিল মাসের ২তারিখ বেলা দশটার দিকে আমি আমার কামরায় বসে আছি। এমন সময় শুনলাম, মার্শাল ল-এর অর্ডার নিয়ে রেডিও অফিস থেকে তিনজন লোক এসেছেন, সাথে টেপ রেকর্ডার। আমার সাথে দেখা করে বললেন, “আপনাকে একটা বিবৃতি দিতে হবে”। একটু পরেই পুনঃ বললেন, “এর জন্য আপনাকে কিচ্ছু ভাবতে হবে না, আমরা কয়েকটা প্রশ্ন এনেছি, আর তার সাথে এনেছি উত্তরটা। আপনি শুধু কণ্ঠটা দিবেন- এই যা”।– বলে আমার দিকে এক টুকরা কাগজ এগিয়ে দিলেন। লিপিটুকু পড়ে- আজ বলবো, আমি সেদিন এত দুঃখের দিনেও মনে মনে না হেসে পারিনি। আজ আমার বলতে দ্বিধা নেই, যেহেতু আজ আমার মুখ বন্ধ রাখার জন্য রাইফেল কিম্বা বেয়নেট উঁচু করে ধরবে না অথবা জোর করে মিথ্যা বলাতে পারবে না; কারণ আজ আমি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিক এবং সর্বোপরি আমার চিন্তাধারা মুক্ত। সেদিনের সে বিবৃতির নামে অপরূপ প্রহসন পড়ে আমি বলেছিলাম, “ আপনাদের এই বানানো উত্তর আমার পক্ষে উচ্চারণ করা সম্ভব হবে না। তবে হ্যাঁ, আমি প্রথম প্রশ্নের উত্তরটা দিতে পারি; সরকার যদি ইচ্ছা করেন তবে তা প্রচার করতে পারেন”। বৌদ্ধদের অবস্থা কেমন’- এরুপ এক প্রশ্নে তা জানতে চাওয়া হলে উত্তরে বলেছিলা, “ঢাকা বৌদ্ধ মন্দিরে অবস্থানরত বৌদ্ধ এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকের আপাতত ভালই আছেন। ঢাকা শহর কিম্বা প্রদেশের অন্যান্য স্থানের লোকদের অবস্থা কেমন তা প্রদেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখতে পারলেই বলবো। তবে সবাই ভালো ও শান্তিতে থাকুক এটাই আমি একান্তভাবে কামনা করি”। এ ছাড়া তখনকার সৃষ্ট অবস্থার জন্য একমাত্র আওয়ামীলীগই দায়ী বলে বলাতে ছেয়েছিলেন। আমি এ বলে উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানাই যে, আমি রাজনীতি বুঝি না, যেহেতু আমি ধর্মগুরু এবং আমার সংঘ কিম্বা আমি রাজনীতির ধার- ধারি না। মানুষের কল্যাণ কামনাই আমার একমাত্র ব্রত।

গোলমালের প্রথম দিকে দিন পাঁচেকের মতো আমাদের টেলিফোন লাইন কাটা ছিলো। এরপর থেকেই চাঁটগা, পটুয়াখালী, বরিশাল, কুমিল্লা এবং আরোও অন্যান্য জায়গা থেকে আমাদের কাছে বার্তা আসতে লাগলো। ঐ মুহূর্তে তারা আমার উপস্থিতির উপর বিশেষ গুরুত্ত আরোপ করছিলো। এর বেশি কিছু প্রকাশ করার মতো তখন কারো অবস্থা ছিলো না। গ্রামের অবস্থা বুঝতে আমার বেগ পেতে হলো না। ঐ সময়ে আমরা ‘আকাশবাণী’ থেকে প্রচারিত এক খবরে জানতে পারলাম, চট্টগ্রামের রাউজান থানার এক বৌদ্ধ বিহার গোলার আঘাতে সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে গেছে এবং একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু মারা গেছেন। আমরা প্রায় সব সময়েই ‘আকাশবাণী’ আর ‘স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র’ থেকে ঐ ধরনের খবর শুনতে পাচ্ছিলাম। আমার প্রাণ ছটফট করছিলো, সংশয়াপন্ন হলাম অনেকের জীবদ্দশা সম্পর্কে। দিন যেতে লাগলো, কিন্তু জনসাধারণের সাথে সাক্ষাৎ করার তেমন কোন কার্যকারী ব্যবস্থা করতে পারলাম না।

এরপর হঠাৎ মে মাসের পয়লা তারিখে তদানীন্তন গভর্নর টিক্কা খান আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমি আমার কর্মী শ্রীজ্ঞানদা রঞ্জন বড়ুয়াকে নিয়ে সাবেক গভর্নর হাউসে গিয়ে উঠলাম। গিয়ে দেখি তৎকালীন চীফ অব স্টাফ হামিদ খান আর টিক্কা খান এক ক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠে অবস্থান করছে। হামিদ খান আমাকে বলল, “আপনাকে বিদেশে বৌদ্ধ রাষ্ট্রগুলোতে পরিভ্রমণে যেতে হবে। এখানে যে আপনারা শান্তিতে আছেন এবং যে সামান্য গণ্ডগোল বেধেছিল তা ঠিক হয়ে গেছে, এটাই বলতে হবে। আমি পাকিস্তা বৌদ্ধদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো”। বৌদ্ধদের নিরাপত্তার কথা শুনে আমি আশান্বিত হলাম; কিন্তু ভাবলাম দেশে যে প্রলয় ক্রমাগত বেড়েই চলছে সেটাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে কিভাবে একটা ডাহা মিথ্যা প্রচারণা চালাবার জন্য বিদেশ যাবো।একটা সম্প্রদায়কে রক্ষা করার নামে কি করে একটা জাতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিবো। বললাম, “গ্রামের লোকেরা এক্কেবারে হতাশ হয়ে পরেছে। আমাকে কাছে পাবার জন্য তারা আকুল আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তারা কেউই ঘর থেকে বের হতে পারছে না। আকি দু’ একদিনের মধ্যে চাঁটগাযেতে চাই”। একটা সফরসূচি দাখিল করতে বলবো আমাকে। আমি সম্মতি জানিয়ে ফিরে এলাম।

ওখান থেকে ফেরার পর থেকেই মানসিক দুশ্চিন্তায় ভীষণভাবে ভুগছিলাম।ভাবছিলাম আমার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে।

ঐ রাত্রে আড়াইটার দিকে কুকুরের ডাকে হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। একটু পরেই কে একজন আমাকে ডেকে জানালো, সে একটু টেলিফোন করতে চায়। আমার কেমন জানি একটু সন্দেহ জাগলো। তাকে জানিয়ে দিলাম, এত রাত্রে টেলিফোন দেয়া সম্ভব নয়। তার অনেক কাকুতি মিনতির পরেও আমি রাজী না হওয়াতে সে চলে যাচ্ছিলো। আঙ্গিনায় তাকে আমাদের কুকুরটা এমনভাবে ধরলো, আমার মনে হল তাকে বুঝি কামড়িয়ে ছিঁড়ে ফেলেছে। আমার মনে করুণা জাগলো। থাকতে না পেরে শেষ অবধি আমি দরজা খুললাম। যেই খোলা, অমনি দু’ পাশ থেকে চারজন যুবক আমাকে ধরে ফেললো। দেখলাম, তাদের কারো হাতে রিভলবার, স্টেনগান কিম্বা রাইফেল। কামরায় এনে তারা আমাকে চেয়ারে বসিয়ে খুব শক্ত করে বেঁধে রাখলো। এরি মধ্যে টেলিফোন লাইন কেটে দিয়েছে। চিৎকার করতে বারণ করে একজন আমার দিকে রিভলবার উঁচু করে ধরে রাখলো। চাবি নিয়ে তারা একটা স্বর্ণ-নির্মিত বুদ্ধ মূর্তি (জাপান সরকার কর্তৃক প্রদত্ত), আমার গোল্ডেন ফ্রেমের চশমা (সিংহলের জনৈক ভদ্রমহিলা দান করেছিলেন), একটা টাইপরাইটার, শরণার্থীদের জমা স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা সহ মোট পনের হাজার টাকার জিনিসপত্র নিয়ে যায়। আমি অবশ্যি কর্তৃপক্ষকে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণসহ এ বিষয়ে অবগত করাই। সেদিন ভেবেছি আমার সরলতার সুযোগ নিয়েই তারা সর্বস্ব লুট করেছিলো।

এরপর আমার জন্মস্থান রাউজান থানার পূর্বগুজরাথেকে ৭ই মে দুখানা টেলিগ্রাম পেলাম। লেখা ছিল,-

“MISCREANTS LOOTED TENPLE WITH ALL THINGS YESTERDAY THREATENING BURNING WHOLE VILLAGE COME IMMEDIATELY” এবং “COME AT ONCE DONT FAIL”

এগুলো পেয়ে আমি রীতিমত বিব্রত হয়ে পড়লাম। অনুমতি ব্যতিরেকে তখন কারো ঘর থেকে বের হবার সাধ্য ছিল না। কারণ, এতে হয় মৃত্যু নয়তো অকথ্য নির্যাতন। আমি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে কর্মীবাহিনীর জন্য কিছু ‘পরিচয় পত্র’ নিয়ে চাটগাঁ যাবার ব্যবস্থা করলাম। ডাঃ পি, সি, বড়ুয়া ও শ্রীমান জ্ঞানদা রঞ্জন বড়ুয়াকে আমার কর্মীবাহিনীর অগ্রবর্তী দল হিসেবে অত্যাচারিত, নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য চাটগাঁ পাঠাই।

মে মাসের তের তারিখ অসম সাহসী মোঃ ইশহাক চৌধুরী সাহেবকে নিয়ে আমি চাটগাঁ পৌঁছাছ তারিখে যে বৌদ্ধ মন্দির লুট করেছিলো, চাটগাঁ গিয়ে জানতে পারলাম তা’ স্থানীয় মুসলিম লীগের কতিপয় অসৎ কর্মীদের দিয়েই সমাধ্য হয়েছিল।

লাম। চাটগাঁ তখন মৃত ও জনমানবশূন্য। আমি কাউকে না পেয়ে শাহজাহান হোটেলে গিয়ে উঠলাম। পরে এক বিরাট কর্মীবাহিনী আমার পিছনে এসে দাঁড়ালো। ৪৬নং বৌদ্ধ মন্দির সরকে সংঘের অফিস করে একটা সফরসূচি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করি এবং কর্মীবাহিনীকে নিয়ে গ্রাম থেকে গ্রামান্তর পরিভ্রমণ শুরু করি।

চাটগাঁ গিয়ে আমি প্রায় ৭০ হাজারের মতো ‘পরিচয় পত্র’সংঘের মাধ্যমে হিন্দু- মুসলমান- বৌদ্ধ- খ্রিষ্টানদের মধ্যে বিলি করি। আমি পরে খবর পেয়েছি, এ পরিচয় পত্র দিয়ে অনেক বৌদ্ধ যুবক এবং হিন্দু পরিবার সামরিক শাসকদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সীমানা অতিক্রম করে আমাদের বন্ধুরাষ্ট্রে চলে গিয়ে মুক্তি সংগ্রামে যোগ দিয়েছিলো।

চাটগাঁয়ের যে সমস্ত গ্রামে যাই, তার কেবল থানার নামই উল্লেখ করছি- রাউজান, রাঙ্গুনীয়া, বোয়ালখালী, পটিয়া, সাতকানিয়া, চকরিয়া, কক্সবাজার, রামু, উখিয়া, টেকিনাফ, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, মীরেশরাই, সীতাকুণ্ড, মহেশখালী, আনোয়ারা, বাঁশখালি।

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি, রামগড়, বান্দরবন, বোয়ালখালী, দিঘীনালা, মায়নীমুখ, কাপ্তাই, চন্দ্রঘোনা।

এছাড়া আমাদের সফরের পরবর্তী পর্যায়ে পটুয়াখালীর তালতলী, আমতলী, গলাচিপা, বরগুনা, খেপুপাড়া, কবিরাজপাড়া, নয়াপাড়া, বইলতলী, কুয়াকাটা সহ মোট ৪২টি গ্রাম ঘুরি।

যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা, খুলনা, বাগেরহাট, ভোলার বিভিন্ন অঞ্চলেও ব্যাপক পরিভ্রমণ করি। টাংগাইলের শ্রী শ্রী অকুকৃল ঠাকুরের ‘সৎসংঘ আশ্রম’ এবং মির্জাপুরের আর, পি, সাহার সংস্থাগুলো পরিদর্শন করি। আমি ও আমার কর্মীবাহিনী তিন মাস আট দিনে সবশুদ্ধু মিলিয়ে প্রায় ১২,০০০ মাইল পরিভ্রমণ করি।

আমাদের পরিক্রমার সময়সূচী বেতারে প্রচার করা হতো। আমাদের যাতায়াতের রাস্তার দু’পাশে সম্প্রদায় নির্বিশেষে যে জমায়েত আর ভিড় লক্ষ্য করেছি, তা থেকে উপলব্ধি করেছি তারা উৎপীড়ন- অত্যাচার সর্বোপরি মৃত্যু ভয় থেকে রক্ষা পাবার ক্ষীণ আলোক দেখেছিলো। আমাদের থেকে দুটো সান্ত্বনার বানী শোনার জন্যে জনসাধারণ সব সময়ই উন্মুখ হয়ে থাকতো। এতে পরবর্তী সময়সূচী পালনে বিলম্ব ঘটতো, কিম্বা সম্ভবও হতো না।

প্রত্যেক গ্রামে এমন কি থান হিসেবে ঘটনা আর নির্যাতনের কথা উল্লেখ করলে এক বিরাট ইতিহাস রচনা করা যাবে। যা দেখছি তার একটা মোটামোটি ধারণা হিসাবে এটাই বলতে হয় যে, উৎপীড়ন, নৃশংস হত্যা, পাশবিক অত্যাচার আর নৈরাজ্যের এক নজিরবিহীন ইতিহাস পাকিস্তানের সামরিক জান্তা রেখে গেছে।

আমরা যে সমস্ত জায়গায় গেছি সে সমস্ত এলাকার লোকদের জাতি- ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষে সভায় আহ্বান জানিয়েছি; তাদের অভাব অভিযোগ নিয়েছি এবং ভবিষ্যতে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে আশা দিয়েছি। বৌদ্ধ গ্রাম ছাড়া আমরা অনেক হিন্দু ও মুসলমান গ্রামেও সভা করে তাদের সাথে মিলিত হয়েছি।

স্বচক্ষে দৃষ্ট অত্যাচারের প্রত্যেকটা বিষয়ে আমরা স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করাই এবং লিখিতভাবে তা পেশ করি। এটা স্থিরনিশ্চিত যে, আমিই আমার সংঘকে নিয়ে সর্বপ্রথম (এবং সর্বশেষও) সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তাদের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে অকুতোভয়ে তাদের অত্যাচারের কথা তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেই। আমার সংঘের তরফ থেকে আমিই তাদের সৃষ্ট রাজাকার, মুজাহিদ, আল- বদর এমনকি নিয়মিত সৈন্যদের বিরুদ্ধে নালিশ করি। এরা তথাকথিত শান্তির নামে যে অশান্তি, নৈরাজ্য ও লুটতরাজ, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালানো, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংসকরণ, নরহত্যা, নারী অপহরণ ও ধর্ষণ এবং তল্লাশীর নামে প্রকাশ্যে স্ত্রীলোকের সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে দেখা- এ সমস্ত আমি জানাই। সামরিক জান্তাকে দাখিলকৃত দু’একটা চিঠির অনুলিপি উদ্ধৃতকরলাম।

রাজাকার ও মুজাহিদের বিরুদ্ধে মেজর জেনারেল অ্যাফেয়ার্স কে ২০শে সেপ্টেম্বর ৭১-এ দেয়া এক চিঠির কিয়দংশ-

…১৭ তারিখের আমাদের চিঠি সংযুক্ত করার সময়, সবিনয় নিবেদন এই যে, পূর্বে উল্লেখিত পুলিশ স্টেশনের আয়তায় (মিরশরাই এবং সীতাকুণ্ড) যে সকল গ্রাম আমরা পরিদর্শন করি, সেখানের মানুষের দুর্বিষহ অবস্থা দেখে বিশেষ করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের যাদের সাথে পূর্ব উল্লেখিত পুলিশ ষ্টেশনের রাজাকার এবং মুজাহিদেরা নির্দয় ব্যবহার করে, নৃশংস ভাবে হামলা করে এবং গুরুতরভাবে প্রহার করে, আমরা আমাদের কান্না ধরে রাখতে পারিনি…

…………..;যে সকল গ্রাম আমরা পরিদর্শন করি তার কোনটিই এই অত্যাচার থেকে রক্ষা পায় নি, তারপরও মিরশরাই পি, এস, এর ভিতরে একটি গ্রাম মাইয়ানির নাম উল্লেখ করতে চাই যেখানে রাজাকাররা তথা কথিত তদন্তের নামে পুরুষদের নৃশংসভাবে অত্যাচার করা হয় এবং মহিলাদের বিবস্ত্র করা হয়…

২৪ সেপ্তেম্বের ১৯৭১ তারিখে রাজাকারদের বিরুদ্ধে মেজর জেনারেল সিভিল অ্যাফেয়ার্স- কেদেয়া অপর এক চিঠির অংশ বিশেষ……

রাজাকাররা বাজারে আবুরখিল গ্রামের (রাওজান, চট্টগ্রাম) সকল বৌদ্ধদের পুড়িয়ে হত্যা করার এক উন্মুক্ত ঘোষণায় আমরা শঙ্কিত হই এবং আমাদের প্রতিনিধি দল পূর্বে উল্লেখিত গ্রামে যান;

যখন আমরা উল্লেখিত গ্রামের প্রধান বৌদ্ধ মঠে প্রবেশ করছিলাম,তখন গ্রামের এক পাশে রাজাকারদের লুটের হিংসাত্মক কণ্ঠস্বর শুনতে পারছিলাম যেখানে প্রায় ১৮ টা ঘরে লুট করা হয়, ঘরের লোকদের নির্দয় ভাবে পিটান হয় এবং ৫ জন নির্দোষ মানুষকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়…..;

উক্ত ব্যাপারে রাজাকারসহ মোট ১৭ জন দুর্বৃত্তকে গ্রেফতার করে বলে খবর পাই।

মীরেশরাই থানার নিয়মিত সৈন্যদের বিরুদ্ধে আমার কাছে যে টেলিগ্রাম এসে পৌঁছে তাও সামরিক কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করি। সেটা ছিল-

মীরশরাই বেস থেকে সৈন্যরা বৌদ্ধ গ্রাম দামদামাতে আক্রমণ করে ২৯ সে নভেম্বের ৫২ ঘর পুড়ে যায় ২ জন হত্যা অনেকে আহত অনেক লুট করা সম্পত্তি মহিলা ধর্ষণ ভগবান বুদ্ধের ভাঙ্গা ছবি ভিক্ষুদের হামলা।

বৌদ্ধ ছাড়া অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকদের যে সমস্ত অভিযোগ পাই তা সামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করে তার কার্যকরী ব্যবস্থা নিই।

মিঃ আব্দুল ওয়ালি-র জবানবন্দি, চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চল, ৭ই সেপ্টেম্বর, ১৯৭১। …; যে রাজাকাররা মানুষের অবরত কষ্টের কারণ।

যে রাজাকাররা ব্যবসায়ী এবং গ্রামবাসীদের বিনামূল্যে জিনিসপত্র বিক্রি করতে বাধ্য করেছে…..;

যে মেইযুযরা নারীদের অত্যাচার করছে এবং নৃশংস ভাবে কয়েকজন মেয়েদের উপর হামলা করেছে। যে দিঘিনালা হাসপাতালে মেইযুসদের হামলার শিকার অনেক মেয়ে পরে আছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের দিঘিনালায় কতিপয় গুন্ডা প্রকৃতির লোক প্রায় ২৫টি হিন্দু পরিবারকে ধর্মান্তরিত করে। শ্রী বিনোদ বিহারী চৌধুরী নামে জনৈক ভদ্রলোকের পাঠানো একখানা দরখাস্ত আমার কর্তৃপক্ষ সমীপে দাখিল করি এবং পুনঃ তাদের ধর্মে দীক্ষিত করার ব্যবস্থা করি। এছাড়া চাটগাঁ আর পটুয়াখালী বহু হিন্দু পরিবারকেও ধর্মান্ত রকরণ থেকে রক্ষা করেছি।

প্রথম পর্যায়ে সামরিক কর্তৃপক্ষ যে সমস্ত বৌদ্ধদের আটক করে তার ৪৯ জনের এক তালিকা প্রস্তুত করে তাদের কাছে পেশ করি। এদের অনেকেই উচ্চপদস্থ কর্মচারী এবং প্রায়ই সরকারি চাকুরে। নিখোঁজ ব্যক্তিদের ছাড়পত্র কিংবা খবরদা দেবার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষ সমীপে বরাবর চাপ দেই। কিন্তু শেষ পর্যন্তও তাদের কোন সন্ধান মেলেনি। তবে মার্চের পরবর্তী অধ্যায়ে রাজাকার কিম্বা মুজাহিদরা যে শত শত লোক ধরে নিয়ে গিয়েছিলো তাদের সামরিক জান্তার মরণ থাবা থেকে আমরা উদ্ধার করতে সক্ষম হই।

বিশিষ্ট সংগীত পরিচালক জনাব আলতাফ মাহমুদসহ বিল্লাহ পরিবারের নুহেল আলম বিল্লাহ, খনু, দিনু ও লিনু বিল্লাহকে সামরিক কর্তৃপক্ষ ধরে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছিল। এঁদের পাঁচজনের মুক্তির জন্য অশেষ প্রচেষ্টা চালানোর পর নুহেল ও তার তিন ভাইকে কোন রকমে প্রাণে বাঁচিয়েছি। দুঃখের বিষয় জনাব আলতাফ মাহমুদকে সামরিক জান্তার মরণ ছোবল থেকে রক্ষা করা গেল না।

আমরা মির্জাপুর সফরকালে সমাজসেবী, জনদরদী শ্রী আর, পি, সাহা-র কন্যা জয়া-র কাছ থেকে তার পিতা, ভাই, অন্যান্য কর্মচারী এবং প্রতিষ্ঠানের সামরিক বাহিনী কতৃক অত্যাচারের এক মর্মন্তদ কাহিনী শুনি। এদের হাত থেকে আর, পি, সাহাকে উদ্ধারের জন্যে বহু প্রচেষ্ঠা চালাই কিন্তু এ জনদরদীর কোন সন্ধান পেলাম না।

পটুয়াখালীতে শ্রী অবনাশ চক্রবর্তী নামে জনৈক ভদ্রলোকে এক ধ্বংসস্তূপরে দিন যাপন করতে দেখি। তাঁর তিন কন্যা মায়া, মঞ্জু ও প্রতিমা সামরিক জান্তার অত্যাচার হতে রক্ষা পাবার জন্য পাঁচ মাস অজ্ঞাতবাস অবস্থায় ছিল। সেখান থেকে আমরা তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসি।

ঢাকাস্থ শ্রীরথীন্দ্র সরকার এবং শ্রীঅলক বলকে রাজাকার এবং পাক সেনারা ধরে নিয়ে অকথ্য শারীরিক অত্যাচার চালায়। এ খবর তাদের সমূহ মৃত্যুর হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হই। শ্রীরথীন্দ্র সরকারমৃতপ্রায় অবস্থায় কিছু দিন হাসপাতালে রাখতে হয়েছিল। ডাক্তার নুরুল ইসলাম সাহেবের (ডাইরেক্টর, পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন) আন্তরিক প্রচেষ্টায় সুস্থ হয়ে ওঠে।

আমাদের পরিক্রমণকালে আমি প্রত্যেক জায়গায় আশ্রয় প্রার্থীকে আশ্রয়দান এবং মুক্তিবাহিনীর কাজে যথাসাধ্য সাহায্য করতে আবালবৃদ্ধবনিতা বিশেষ করে যুব সমাজকে পরামর্শ দিয়েছি। এমন কোন বৌদ্ধ গ্রাম নেই যেখানে মুক্তিবাহিনী এবংহিন্দু পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেনি, এমন কি জনৈক অফিসারসহ পাঁচজন মুক্তিবাহিনী ঢাকা বৌদ্ধ মন্দিরে আশ্রয় নিয়ে তাদের কাজ চালিয়ে গিয়েছিলো।

বিগিত ন’মাসে আশ্রয় প্রার্থী অনেক ছেলেমেয়ে এবং মাতৃপিতৃহীন শিশু আগ্রসার বৌদ্ধ অনাথালয় ভিক্ষু সুগতানন্দের তত্ত্বাবধানে আছে।

পয়লা মে তারিখে ঢাকা বৌদ্ধ মন্দির লুট হলে তদন্তের পর কর্তৃপক্ষ আমাকে আত-দশ জনের নাম দাখিল করতে বলে। আমি অসম্মতি জানালে তারা গ্রাম ঘেরাও করে জ্বালিয়ে দেবে বললো। আমি বলেছি, আমার কেস- এর তদন্তের প্রয়োজন নেই। তদন্তের প্রয়োজন নেই। তদন্তের নামে অনর্থক কতকগুলো নিরীহ লোকের উপর অত্যাচার হোক, এ আমি কোনদিন চাইনা। এভাবে কমলাপুরের ঠাকুরপাড়া, সবুজবাগ, আহমদবাগ প্রভৃতি আমার প্রতিবেশী গ্রামের উপর পাক-সৈন্যদের হামলা সব সময় প্রতিরোধ করেছি।

পরিভ্রমণকালীন ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরে যে সমস্ত মূর্তি ভগ্ন কিম্বা অক্ষত অবস্থায় দেখতে পাই তা যথাস্থানে রক্ষিত আছে। আমার সংঘ বৌদ্ধগ্রাম ও মন্দিরের ক্ষয়ক্ষতির একটা মোটামোটিফর্দ তৈরী করে তা সামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করে তার ক্ষতিপূরণের দাবি জানায়।

এরি মধ্যে আন্তঃ পরিভ্রমণ বন্ধ করে বিদেশ যাবার জন্যে বারবার আমার কাছে চাপ পড়তে লাগলো। আমি জানিয়েছি, স্বচক্ষে দেখা এত অত্যাচারকে ধামাচাপা দিয়ে বিদেশে গিয়ে আমার পক্ষে মিথ্যা বলা কি করে সম্ভব? কিন্তু তারা সে কথায় কর্ণপাত না করে ক্রমাগত পীড়াপীড়ি শুরু করলো।

শরণ নিলাম পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন ইন্সটিটিউটের ডাইরেক্টর প্রফেসর নুরল ইসলাম সাহেবের। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সাড়ে তিন মাস ডাক্তার সাহেবের চিকিৎসাধীনে থাকতে বাধ্য হলাম।

হাসপাতালে থাকা অবস্থায়ও পাঁচ- ছ’বারের মতো কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থিত হতে আমাকে বাধ্য করেছিলো এবং বিদেশে যাবার জন্য নানাভাবে ভীতি প্রদর্শন করেছিলো। আমি শারীরিক অনুপযুক্ততার কারণ দেখিয়ে বিদেশে শত মিথ্যা বলা থেকে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সূর্যের উন্মেষের অন্তরায় না হয়ে বাঁচলাম।

আমাকে বিদেশে পাঠিয়ে পাক- সরকার যে কাজ সমাধা করতে ব্যর্থ হল মেজর রাজা ত্রিদিব রায়কে দিয়ে তা করিয়ে নিলো। আমার কাঁধ থেকে বোঝটা নামতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আমি হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আসলাম।

সামরিক কর্তৃপক্ষ জোর করে আমার কাছ থেকে দু’টো বিবৃতি নিয়ে প্রচার করে। ন’ মাসে আমার নামেও মোট তিনখানা বিবৃতি ছাপায়। কিন্তু আরেকখানা আমার খুলনা পরিভ্রমণকালীন আমার এবং আমার সংঘের সম্পূর্ণ অজ্ঞাতে ছাপানো হয়। তখন এগুলোর প্রতিবাদ করেও কোন ফল হয় নি। অধিকন্তু সামরিক জান্তা আমার উপর অধিকতর অসন্তুষ্ট ও ক্রুদ্ধ হয়।

এ ছাড়া দেশে থেকেও সামরিক জান্তার অত্যাচারে কথা বিশ্বের কাছে প্রচার করার সুযোগ পেয়েছিলাম। কয়োটো, জাপান এ ‘বিশ্বধর্ম ও বিশ্বশান্তি সম্মেলনে’ উপস্থিত থাকাকালীনদি ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অফ রিলিজিয়ন অ্যান্ড পিস-এর সেক্রেটারি জেনারেল ডঃ হোমার এ জ্যাক- এর সাথে আমার আন্তরিকতা জন্মে। মানবতার সেবায় আমি নিয়োজিত এ খবর পেয়ে আমার সাথে দেখা করতে তিনি টুরিস্ট হিসেবে একদিনের জন্যে ঢাকায় আসেন। আমি তখন হাসপাতালে। রুদ্ধদার বৈঠকে তাঁর সাথে আমার পুরো সোয়া তিন ঘণ্টা আলাপ হয়। দীর্ঘকাল পরিভ্রমণে আমি স্বচক্ষে যা দেখেছি কিম্বা শুনেছি- রাজাকার, পাক- সৈন্যের অত্যাচার- অনাচার, লুটতরাজ, হত্যাযজ্ঞ, নারীহরণ ও নির্যাতন- এ সবই তাকে সবিস্তারে বলেছি। আমার হাসপাতালে আশ্রয় নেবার কারণ এবং এ তথ্য প্রকাশের পিছনে যে আমি, এ কথা ঘুনাক্ষরেও প্রকাশ না করতে ডঃ জ্যাক কে অনুরোধ করি। অন্যথায় আমার জীবন সংশয়ের কারণ হবে বলে জানাই। তিনি আমার এই অনুরোধ রক্ষা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

ডঃ জ্যাক নতুন দিল্লিতে এ বিষয়ে এক আলোচনা বৈঠকে মিলিত হন। এতে বাইশটি সংস্থা এক যুক্ত স্মারকলিপি পেশ করেন। এর পর ওয়াশিংটনে পঞ্চাশটি রাষ্ট্রের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে অনুরুপ এক বৈঠক বসে। তিনি বাংলাদেশ সম্পর্কে চারটি প্রণয়ন করেন। এগুলো-

১.“ইস্টবেঙ্গল/ বাংলাদেশ”

২. “ঢাকাডায়েরি”

৩. ডেথইনগোল্ডেনবাংলাদেশ

৪.“ফাইনাল রেসোলুশন”- ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন বাংলাদেশ

এ বইগুলোতে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তার অধিকাংশই আমাদের বৈঠকেরই ফলশ্রতি। এগুলো ছাড়া তিনি মাসিক পত্রিকা ( নভেম্বর, ৭১ ইং )

‘বিয়ন্ড কয়োটো’ এর ‘অন ভিসিটিং ঢাকা’ তে লিখেছেন-

…..;..ঢাকায় আমি জানতে পারি প্রায় ১০০,০০০ মানুষ গণহত্যার শিকার হয়…….; হত্যাকাণ্ড চলছে, নতুন গৃহরক্ষী ও রাজাকারদের মাধ্যমে। আমি বুঝতে পারি কিভাবে আট লাখ হিন্দুদের হত্যা করা হয়েছে পশ্চিম পাকিস্তানি মিলিটারি সৈন্ন্য দিয়ে……; এ হত্যাকান্ডে আমি আরও সংযুক্ত করতে চাই যে-; পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি যা করছে তা সারা পৃথিবীর মানুষ ভুলতে পারবে না যেমনটা হিটলার জার্মানিতে করেছে।

না পৌঁছানো পর্যন্ত আমি বলতে পারছি না, বাংলাদেশের মুভমেন্টে এর গরিলা আর্মি এবং মুক্তি বাহিনিতে মানুষের কতটা সমর্থন আছে। তবে এ সম্বন্ধে অনেক শুনেছি বাংলাদেশ রেডিওতে…..;

ডঃ জ্যাক ছাড়াও আমার পরিচিত জাতিসংঘের জনৈক উচ্চপদস্থ কর্মচারী ঢাকা থেকে থাইল্যান্ড যাবার পথে আমার সাথে দেখা হয়। থাইল্যান্ডে ‘ ওয়ার্ল্ড ফেলোশিপ অফ বুদ্ধিস্ট’ এর প্রধান কার্যালয়কে তাঁর মাধ্যমে ঐ সমস্ত জঘন্য অত্যাচারের বিষয় অবগত করাই এবং এখানকার নিপীড়িত জনগণের দুঃখ উপশমের জন্য পাকিস্তান সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার আবেদন জানাই।

এই খবর শুনে উক্ত সংঘের প্রেসিডেন্ট প্রিন্সেস পুন পিশমাই দিসকুল পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে একখানা চিঠি দেন এবং রাষ্ট্র সংঘের সেক্রেটারি জেনারেল উথান্ট থাইল্যান্ডে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত এবং আমাকে তার অনুলিপি দেন। চিঠিটা পুরো উদ্ধৃত করলাম।

জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান,

পাকিস্তান রাষ্ট্রপতি

ইসলামাবাদ

১৫ই সেপ্টেম্বর, ৭১

মহামান্য,

আমরা আপনার এই মর্মে দৃষ্টিগোচর করতে চাই যে, ঢাকায় বিশ্ব বৌদ্ধ সংঘের একটি সক্রিয় আঞ্চলিক শাখা রয়েছে রয়েছে নিম্নে বর্নিত ঠিকানায় যা আমাদের সংগঠন ১৯৫০ সালে সিলনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে সংশ্লিষ্ট।

যেহেতু বর্তমানে পূর্ব পাকিস্তানে অস্থির অবস্থা চলছে এবং আমরা আমাদের আঞ্চলিক শাখা নিয়ে গভীর ভাবে শঙ্কিত যেহেতু আমরা তাদের সাথে কোন রকম যোগাযোগ করতে পারছি না।

আমরা তাই মহানুভবের কাছ থেকে উপরে বর্নিত জায়গায় অবস্থানরত আমাদের ভিক্ষু ও সাধারন ছাত্রদের অবস্থা সম্পর্কিত তথ্য জানতে চাইছি। আমাদের তরফ থেকে কোন সাহায্য করলে আমরা যদি তাদের এই অবস্থা থেকে মুক্ত করতে পারি আমরা সেগুলো করতে করতে আগ্রহী আছি যদি মহানুভব আমাদের তাদের সংক্রান্ত কোন তথ্য বা যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারেন।

মহানুভবকে আন্তরিক শুভেচ্ছা সহ,

ধাম্মা হতে

এসডি

এইচ এস এইচ পুন সমাই দিসকুল

সভাপতি

বিশ্ব বৌদ্ধ সংঘ

ঠিকানাঃ ডাব্লিউ,এফ,বি আঞ্চলিক শাকা

পাকিস্তান বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ

বৌদ্ধ মন্দির, কমলাপুর

ঢাকা – ২, পূর্ব পাকিস্তান।

সিসি – এইচ ই ইউ থান্ট, মহাসচিব জাতিসংঘ।

এইচ ই পাকিস্তান রাষ্ট্রদূত, ব্যাংকক, থাইল্যান্ড।

ডাব্লিউ এফ বি – সম্মানিত সাধারন সম্পাদক জনাব আইয়েম সাংখাভাসি১

আমরা আপনার ১৮-০৮-৭১ তারিখে লেখা চিঠি পেয়েছি এবং আপনি আপনার লোকজনের জন্যে যে মানবিক কার্যক্রম করছেন তার প্রশংসা জানাই। মানুষের শান্তি ও কল্যান ফিরিয়ে আনার জন্যে আপনি যেই কষ্টসহিষ্ণু চেষ্টা করে যাচ্ছেন তা অবশ্যই আপনাকে অধিক সাফল্য এনে দেবে;

আপনার ১৯-০৬-৭১ তারিখের চিঠির প্রেক্ষিতে আমরা আপনার দেশের দুঃখজনক অবস্থার জন্যে সহানুভুতি জানাই এবং আপনাদের মানুষজনের কষ্টলাঘবের জন্যে আপনার আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্যে সাধুবাদ জানাই।

আমরা বুঝি, এটা একটা কঠিন কাজ যেখানে এমন ধৈর্য ও নৈপুন্যের সাথে মানবতার জন্যে নিবেদিতভাবে কাজ করতে হচ্ছে। আমরা প্রার্থনা করি আপনার যাজক মানসিক ও শারীরিকভাবে এমন কঠিন কাজ সম্পাদনে সফল হোক।

সকল ভুক্তভোগি সহধর্মীদের ভালোবাসা সহ

এ সমস্ত চিঠি থেকে এটা স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে -বর্হিবিশ্বে এখানকার মর্মন্তুদ কাহিনী ফলপ্রসুভাবে প্রচার করতে সক্ষম হয়েছি এবং বিশ্ব সংস্থা ঐ অবস্থায় আমার ভূমিকা উপলব্দি করতে পেরেছে। সামরিক কর্তৃপক্ষ আমার উপর সন্তুষ্ট নয় জেনে এবং এখানে থাকলে আমার সমূহ বিপদ ভেবে W.F.B এর প্রেসিডেন্ট আমাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য এক উদ্যোগ গ্রহণ করে আমন্ত্রণ জানাবেন।

ভেন, ভিসুনানন্দ মাহাত্ম্যরো

সভাপতি

পাকিস্তান বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ

বৌদ্ধ সমিতি

কমলাপুর, ঢাকা-১৪

পূর্ব পাকিস্তান।

১৫, নভেম্বর ৭১

মাননীয়,

আপনাকে জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত যে, ২০-২৪ ডিসেম্বর ব্যাংককে অনুষ্টিতব্য আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ ইয়থ কনফারেন্সের সকল প্রস্তুতি সমাধা হয়েছে।

আপনি ইতিপূর্বে আমাদের পূর্বে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন কনফারেন্সে যোগদান করেছেন এবং আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন। আমরা আশা করবো আপনি এবারো আমাদের সাথে ব্যাংককে যোগদান করবেন এবং আপনার মূল্যবান অভিজ্ঞতা ও পথপ্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের ধন্য করবেন।

দয়া করে আমাদের জানাবেন আপনি কখন আসছেন এবং আমরা সে হিসেবে আপনার জন্য উপযুক্ত স্থানে আপনার জন্য সমস্ত কিছুর আয়োজন করবো।

আশা করি আপনার ভ্রমণ নিরাপদ হবে। জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক।

আপনারই

এসডি/

এইচ।এস।এইচ রাজকুমারী পুন পিস্মাই দিসকুল

সভাপতি

বিসস বোদ্ধ সমিতি

কিন্তু সামরিক সরকার আমার উপর সন্দেহ প্রকাশ করে থাইল্যান্ড যাবার অনুমতি দিলো না।

পরিশেষে মানবতার সেবা করতে গিয়ে আমার সমাজ ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকদের কাছ থেকে আমি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যে অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা পেয়েছি তা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি। আমার সংঘের বিরাট কর্মীবাহিনী মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে জাতির দুর্দিনে যে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে সমাজ ও দেশের কাছে তা চিরজাগ্রুক থাকবে বলে আমার দৃঢ়বিশ্বাস।

আমার প্রিয় শিষ্য শ্রীমান প্রিয়নন্দ মহাখের, ভিক্ষু মুদ্ধানন্দ, ভিক্ষু জিনানন্দ, ভিক্ষু সুগতানন্দ, ভিক্ষু বোধিপাল, শ্রীশাক্যবোধি মহাদথের, উ- জিনিতা মহাথের, উ- নাইদা, উ- পণ্ডিতা, ভিক্ষু অগ্রবংশ, ভিক্ষু অগ্রশ্রী, শ্রী প্রফুল্লকমল বড়ুয়া, শ্রীবসুভূতি মুৎসুদ্দী , শ্রীজ্ঞানদার বড়ুয়া, শ্রীব্রহ্মদত্ত বড়ুয়া, শ্রীরণজয় বড়ুয়া, শ্রীসুধেন্দু বড়ুয়া, শ্রীঅশক বড়ুয়া, শ্রীআনন্দ প্রসাদ বড়ুয়া, শ্রীশশাঙ্ক মোহন বড়ুয়া, শ্রীসুনীল কান্তি বড়ুয়া, মোহাম্মদ ইছহাক চৌধুরী, শ্রীসুদত্ত সেবক বড়ুয়া, শ্রীতেজেন্দ্রনাথ বড়ুয়া, শ্রীইন্দুভূষণ বড়ুয়া, শ্রীসুমেধ বড়ুয়া, শ্রীযতীন্দ্রনাল বড়ুয়া, শ্রীবেণীমাধব বড়ুয়া, শ্রীবিজনবিহারী বড়ুয়া এবং আরও অনেকে পাকসেনার রক্তচক্ষু ও বুলেটের ভয়কে উপেক্ষা করে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে এ ন’ মাস দিনের পর দিন দেশের অত্যাচারিত লাঞ্ছিত মা- বোনদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, কত শত মুক্তিবাহিনী ও দেশের তরুণ প্রানের পাশে সমূহ মৃত্যুর হাত থেকে ছিনিয়ে এনেছে তার ইয়ত্তা নেই। রক্তঝরা এই ন’ মাসের কার্যবিবরণীতে সংঘের বিরাট কর্মীবাহিনীর কর্মতৎপরতার পূর্ণাংগ চিত্র প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে।

আজ এ ভেবে আমার চক্ষু অশ্রুসিক্ত হয় যে, আমাদের সংঘের চাটগাঁ শাখার অফিস- ইন- চার্জ বিশিষ্ট কর্মী শ্রীমৎ জিনানন্দ ভিক্ষু, যিনি রাজাকার ও মুজাহিদদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ এনেছিলেন, স্বাধীনতা প্রাপ্তির ঠিক দুদিন আগে তিনি এদেরই জঘন্যতম শিকারে পরিণত হন। সংসারত্যাগী, মানবধর্মী এই নবীন ভিক্ষু গত পঁচিশে মার্চের পর থেকে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত চাটগাঁ, কুমিল্লা, নোয়াখালীর প্রতিটি উপদ্রুত গ্রামের প্রতিটা সম্প্রদায়ের আবালবৃদ্ধবনিতাকে রক্ষার জন্য যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন তা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।

আজ যে সংঘের মাধ্যমে আমি তথা আমার প্রতিষ্ঠান এবং সম্প্রদায় বহিরবিশ্বে সুপরিচিত হয়েছে সে সংঘেরই বিশিষ্ট কর্মী, অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শ্রীশশাঙ্ক বিমল বড়ুয়াকে (বঙ্গীশ ভিক্ষু) হানাদার পাকবাহিনীর হাতে প্রাণ দিয়েছেন।

এতদসংগে আমি গভীর ভাবে স্মরণ করছি স্বাধীনতা সংগ্রামে শত শত বিগতপ্রাণ মহান জীবনগুলো। ছাত্র- ছাত্রী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, ডাক্তার, মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর শহিদদের পারলৌকিক মঙ্গল কামনা করছি এবং তাঁদের শোকশন্তপ পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

সবেব সত্তা সুখীতা হোন্তু।

জগতের সমস্ত প্রাণী সুখী হোক।

।।জয় বাংলা।।

দপ্তরে এসএমএলএ এসইসি -৪

সার্কিট হাউজ

চট্টগ্রাম

টেলি: ৮৫৫৫

নং,২০ / ৩৫ / এমএল

২৬ জুন, ৭১

প্রতি: ভেন. ভিষুদ্ধনান্দ মালিয়া হিরো

টি পিকে, টি কে প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান

বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ

ঢাকা।

বিষয়: পিটিশন / তদন্ত

আপনার চিঠির নং নীল তারিখ,২৮মে ৭১ বোঝায়।

আপনার তথ্যের জন্য পুলিশ সুপারের তদন্তের একটি কপি এর সাথে সংযুক্ত করা হলো। ইনচেল-ওয়ান।।

১১০৩৫১২ই 25 জুন 71 এর পুলিশ সুপারের চিঠির একটি কপি,।

আমি এটা প্রতিবেদন করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি, আম তদন্ত করে দেখেছি যে বিষয়গুলো স্থানীয় এবং টি এন্ড টি অফিসের ভিত্তিতে , যারা দূর্ঘটনার সময় উপস্থিত ছিল।

উদাহরনস্বরূপ।

যে ব্যক্তিবর্গ কে 29 এপ্রিল 71 এ নিজেদের অফিসে থাকার কথা ছিল যারা এই সংযুক্ত পিটিশনে অন্তর্ভূক্ত।।

সেই একই দিনে দুপুর ১টায় সার্কিট হাউজে তাদেরকে কিছু সেনাসদস্য ডেকে নিয়ে গেছিলো, কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা ফিরে আসে নি।।

তদন্তের সময় এটা প্রকাশিত হয় যে ধর্মদর্শী বড়ুয়া একজন অবকাশ প্রাপ্ত কেরানী ছিলো, টেলিফোন অপারেটর না যেমন টা পিটিশনে উল্লেখিত ছিলো।।

টি এন্ড টি এর কর্মচারীদের মাধ্যমে এটি আরো প্রকাশিত হয় যে ৫ কর্মকর্তাদের সেনা সদস্যরা টি এন্ড টি এর অফিস প্রাঙ্গন থেকে ডেকে নিয়ে গেছিলো, তাদের নিজস্ব অফিস কক্ষ থেকে নয়।।

ই পি রেইলওয়ে স্টেশন রোড 21. 4 71 এ ডেপুটি চিফ অ্যাকাউন্টস অফিসার জনাব সি আর বড়ুয়া স্টেনোগ্রাফার-এর সংক্ষিপ্ত রূপ-টাইপিস্ট হিসেবে (আধুনিকীকরণ) অফিসে উপস্থিত হন। সেখান থেকে তাকে কিছু সেনা সদস্য সার্কিট হাউজে নিয়ে যায় কিন্তু সে ও আজ পর্যন্ত তার অফিসে ফিরে আসেনি।.

-তদন্তে এটি সামনে আলোকপাত করা হয়েছিলো যে ঐসকল ব্যক্তি সকল ঝামেলার মধ্যেও তাদের অফিস নিয়মিত করতো।তাদের সম্পর্কে আর কোনো প্রতিকূল প্রতিবেদন পাওয়া যায় নি। আপনাদের জ্ঞাতার্থে অনুগ্রহপূর্বক এইটুকু জানাচ্ছি।।

কর্মীদের তালিকা, যাদের আর্মীরা নিয়ে গেছিলো তাদের নামের পাশে দেখানো তারিখগুলোতে।।

নাম ও পদবী:।

১.১.জনাব এস আর বড়ুয়া, এম এ, পি আর এ এস।

উপ-অর্থনৈতিক উপদেষ্টা।

উপ-প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, পি।

ই রেলওয়ে, চট্টগ্রাম।

সে ঝামেলা শেষ হওয়ার পর।

প্রতিদিন নিয়মিত অফিস করতো।এবং ১৬-০৪-৭১ এ অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে।

আর্মিরা তাকে ধরে নিয়ে যায়।.

–

২. জনাব প্রভাস কুমার বড়ুয়া. সাব-

অস্ত্রোপচার. চট্টগ্রাম।

বিশ্ববিদ্যালয়. চট্টগ্রাম ২১-০৪-৭১ তারিখে তাকে তার ৪ নং সারসন রোডের বাসভবনের সামনে থেকে আর্মিরা ধরে নিয়ে গেছিলো।

৩. জনাব চীন রঞ্জন বড়ুয়া,।

শ্রুতিলেখক, আধুনিকায়ন।

হিসাব। পি ই রেলওয়ে,।

চট্টগ্রাম। রেলওয়ে পে অফিসের ডিউটির পর যখন সে তার বেতন তুলছিলো তখন তাকে আর্মীরা ধরে নিয়ে গেছিলো।।

৪. জনাব সঞ্চয় ভূষণ বড়ুয়া, ইলেকট্রিক।

কপিকল ফিটার, বৈদ্যুতিক বিভাগ.।

চট্টগ্রাম পোর্ট ট্রাস্ট. চট্টগ্রাম. ২১-০৪-৭১ তারিখে তাকে তার অফিসের জেটি থেকে ধরে নিয়ে গেছিলো আর্মীরা।।

৫. জনাব তরত কামী বড়ুয়া, টেলিফোন।

অপারেটর, টিঅ্যান্ডটি বিভাগ. চট্টগ্রাম. মার্শাল কতৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসারে সে ২১-০৪-৭১ তার অফিসে প্রতিবেদন করে এবং কতৃপক্ষের সংশ্লিষ্টে তার জন্য একটি ‘নিরাপত্তা পাস’ ইস্যু করে দেয়াঠয় এবং নিজ দ্বায়িত্ব পালনে তাকে পরামর্শ দেয়া হয়। ২২-০৪-৭১ তারিখ হতে সে ভালোভাবে তার দ্বায়িত্ব পালন করতে থাকে কিন্তু ২৯-০৪-৭১ তারিখ দুপুর ২টার সময় তাকে তার ডিউটির সময় হতে আর্মী সদস্যরা ধরে নিয়ে যায়।।

৬. জনাব চীন রঞ্জন বড়ুয়া, অফিস।

সুপারিনটেনডেন্ট টিঅ্যান্ডটি চট্টগ্রাম ঐ।

৭. জনাব ধর্মদর্শী বড়ুয়া, টেলিফোন /।

অপারেটর, টিঅ্যান্ডটি চট্টগ্রাম ঐ।

৮. জনাব পরাগ বড়ুয়া, টেলিফোন / অপারেটর. টি।

টি চট্টগ্রাম ঐ।

৯. জনাব সুধীর রঞ্জন বড়ুয়া,।

ইলেট্রিশিয়ান. কেপিএম।

লি. বিভাগ,পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐ।

১০. জনাব হরেন্দ্র লাল বড়ুয়া, মেকানিক্যাল।

বিভাগ. কর্ণফুলী কাগজ মিলস লিমিটেড,।

চন্দ্রঘোনা, পার্বত্য চট্টগ্রাম। ১৪-০৪-৭১ এ তাকে নিয়ে গেছিলো।।

১১. জনাব সত্যরঞ্জন বড়ুয়া, স্বত্বাধিকারী.।

মোটর ওয়ার্কশপ,চাঁদপুর,।

চট্টগ্রাম তাকে তার কর্মশালা থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো।।

১২. জনাব ভবেশ চন্দ্র বড়ুয়া, ক্লার্ক.।

ওয়ার্কশপ, পোর্ট ট্রাস্ট, চট্টগ্রাম ২৬-০৪-৭১ এ তাকে নিয়ে গেছিলো।।

১৩. জনাব বিপুল কান্তি বড়ুয়া, স্বর্গীয়।

বিল্ডিং, কলেজ রোড, চট্টগ্রাম ০৩-০৫-৭১ এ তাকে নিয়ে গেছিলো।।

১৪. জনাব সুবিমল বড়ুয়া, টেলিফোন / অপারেটর, টি।–

; টি চট্টগ্রাম ২৯-০৪-৭১ এ তাকে নিয়ে গেছিলো।।

১৫. জনাব বঙ্গীশ বড়ুয়া, সহকারী প্রধান।

মাস্টার কাপ্তাই সরকার. এইচ ই স্কুল ১৪-০৪-৭১ তারিখ হতে সে নিরুদ্দেশ.

–

সংঘ কতৃক ইস্যুকৃত পরিচয়পত্রের অনুলিপি.

-“নমোঃ তাসা”।

পাকিস্তান বুদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ।

(বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক সংগঠন)।

পাকিস্তানে বৌদ্ধ ওয়ার্ল্ড ফেলোশিপ রিজিওনাল সেন্টার.

.সদর দফতর।

বৌদ্ধ বিহার।

কমলাপুর. ঢাকা -14.

-চট্টগ্রাম অফিস।

30/5. আন্দের্কিল্লা. চট্টগ্রাম।

পূর্ব পাকিস্তান.

.সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের অংশ।

তারিখ-।

এটা প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে জনাব/জনাব……….; পুত্র / কন্যা / জনাব /স্ত্রী ………….; এর ………..; থানা।

……….; চট্টগ্রাম জেলায় জন্মসূত্রে একজন পাকিস্তানী।

-“কতৃপক্ষের কাছে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করা হলো”।

স্বাঃ /ভীন বিষুদানন্দ।

সভাপতি।

পাকিস্তান বুদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ।

ঢাকা.

dhammabiriya ধম্মবিরীয়
ধম্মবিরীয়

প্রকাশক ও সম্পাদক, ধম্মইনফো-ডট-কম

Subscribe to Our Newsletter

Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!

ধম্মইনফো এর সকল আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

এই ধম্মইনফোটি শেয়ার করুন
টুইটার ইমেইল লিং কপি করুন প্রিন্ট
পূর্বের ধম্মইনফো আমেরিকার ধর্ম ও সাংস্কৃতিক আমেরিকার ধর্ম ও সাংস্কৃতিক সংহতির প্রতীক হয়ে উঠছে নিউ জার্সির বুদ্ধ মূর্তি
পরবর্তী ধম্মইনফো সিদ্ধার্থের জন্ম সিদ্ধার্থের জন্ম
আপনার ভাবনা শেয়ার করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বাধিক পঠিত ইনফো

প্রবারণা ও ফানুস
ধর্মীয় বিষয়কে উৎসবে পরিণত করার নেতিবাচক প্রভাব: প্রবারণা পূর্ণিমা ও ফানুস উড়ানো
প্রবন্ধ
নিউইয়র্ক
নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসে বৌদ্ধ বিহারে অগ্নিকাণ্ড: দুইজনের মৃত্যু
সংবাদ
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি: ধর্মনিরপেক্ষতার সংকট ও সহিংসতার পুনরাবৃত্তি
নির্বাচিত
লুম্বিনী হাতে আঁকা ম্যাপ
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান যেভাবে খুঁজে পান এক বাঙালি
ইতিহাস ঐতিহ্য নির্বাচিত
বৌদ্ধ ভিক্ষু
বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নিরাপত্তা উদ্বেগ : তিন পার্বত্য জেলায় এ বছর ‘কঠিন চীবর দান’ না করার সিদ্ধান্ত
নির্বাচিত সংবাদ
হেনেপলা গুনারত্ন মহাথেরে
শ্রীলংকার গ্রাম থেকে আমেরিকার মহাঅরণ্যে: হেনেপলা গুনারত্ন মহাথেরের জীবন, দর্শন এবং অবদান
জীবনী

আরো ইনফো পড়ুন

সংখ্যালঘু হামলা
সংবাদ

সংখ্যালঘু বৌদ্ধ পরিবারের বসতভিটা দখলের চেষ্টা ও হামলা

মহেশখালী, কক্সবাজার — কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার উত্তর নলবিলা গ্রামে এক সংখ্যালঘু বৌদ্ধ পরিবারের বসতভিটা দখলের উদ্দেশ্যে হামলা, চাঁদা দাবি…

3 বার পাঠ করেছে
বাংলাদেশ
নির্বাচিতসম্পাদকীয়

সাড়ে ৪ মাসে বাংলাদেশে ১৭৪ সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত ২৩ সংখ্যালঘু: একটি ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট

বাংলাদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর চলমান সহিংসতা এবং বৈষম্যমূলক আচরণ একটি গভীর মানবাধিকার সংকটের ইঙ্গিত। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, মাত্র…

4 বার পাঠ করেছে
বাংলাদেশ
সম্পাদকীয়

ব্যর্থ রাষ্ট্র “বাংলাদেশ”: আদিবাসী জনগণের বৈষম্য এবং অবহেলা

বাংলাদেশের ৫৪ বছরের স্বাধীনতার ইতিহাসে আদিবাসী জনগণের অধিকার বার বার লঙ্ঘিত হয়েছে। স্বাধীনতার দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এলেও, আদিবাসী জনগণ এখনও…

2 বার পাঠ করেছে
সংঘরাজ ধর্মাধার মহাস্থবির
জীবনী

সংঘরাজ ধর্মাধার মহাস্থবির : বিরল মনস্বিতা সম্পন্ন এক জ্ঞানবিটপী

উপমহাদেশের প্রখ্যাত বৌদ্ধ মনীষা, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতপূর্ব অধ্যাপক, ভারতীয় প্রথম সংঘরাজ অগ্রমহাপণ্ডিত ধর্মাধার মহাস্থবির। এই জ্ঞানতাপস চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলাধীন…

6 বার পাঠ করেছে
Logo dark logo

আমাদের ইনফো

  • ধম্মইনফো সর্ম্পকে
  • যোগাযোগ
  • উপদেষ্টা
  • অর্থায়ন
  • ইনফো প্রেরণ করুন

গৌতম বুদ্ধের জীবনী

  • জন্ম
  • শৈশব কাল
  • বিবাহ
  • গৃহ ত্যাগ
  • বুদ্ধত্ব লাভ
  • ধর্ম প্রচার
  • মহাপরিনির্বাণ

বিশ্ব বৌদ্ধ ইনফো

  • এশিয়া
  • ইউরোপ
  • আফ্রিকা
  • উত্তর আমেরিকা
  • দক্ষিণ আমেরিকা

স্বদেশ ইনফো

  • জীবনী
  • ইতিহাস
  • সাহিত্য
  • ঐতিহ্য
  • সংস্কৃতি

আরো ইনফো

  • সম্পাদকীয়
  • গবেষণা
  • নির্বাচিত
  • সংবাদ

মিডিয়া ইনফো

  • ইউটিউব
  • ফেইসবুক
  • ইনস্টাগ্রাম
  • টুইটার

স্বত্ব © ২০১১-২০২৪ ধম্মইনফো সম্পাদক ও প্রকাশক: ধম্মবিরীয় ভিক্ষু

বৌদ্ধ
ধম্মইনফো তে আপনাকে স্বাগতম!

* ধম্মইনফো তে নিয়মিত লিখে আপনিও অবদান রাখুন। * ধম্মইনফো লেখা আপনার বন্ধু/পরিচিত জনের সাথে বেশী বেশী শেয়ার করুন।

Welcome Back!

Sign in to your account

পার্সওয়ার্ড ভুলে গেছেন?