বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এক্সে (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে এই নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেছেন।
ট্রাম্পের এক্স বার্তায় স্পষ্ট হয়েছে যে, তিনি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় নিজেদের অবস্থানকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছেন। তাঁর মতে, বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যে সহিংসতা চলছে, তা একদিকে যেমন অমানবিক, অন্যদিকে এটি একটি গভীর রাজনৈতিক সংকটের ইঙ্গিত। তিনি উল্লেখ করেছেন, “বাংলাদেশে দলবদ্ধভাবে হামলা ও লুটপাট চালানো হচ্ছে,” যা সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি।
এখানে উল্লেখ্য, ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনের সময় ধর্মীয় বিদ্বেষের বিরুদ্ধে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, যা তাঁর সমর্থকদের কাছে তাঁকে জনপ্রিয় করেছে। তবে, বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে তাঁর এই অভিযোগ রাজনৈতিক লড়াইয়ের একটি অংশও হতে পারে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সময়ে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়টি যে যথাযথভাবে গুরুত্ব পায়নি, সেটি ট্রাম্পের বক্তব্যে স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, “কমলা ও জো বিশ্বজুড়ে ও আমেরিকায় হিন্দুদের উপেক্ষা করে আসছেন,” যা বোঝায় যে, তিনি এই প্রশাসনের নীতিগুলোকে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করছেন।
ট্রাম্পের বক্তব্যে ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতিরও প্রতিফলন দেখা গেছে। তিনি বলেছেন, “আমরা আপনাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করব,” যা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের উদ্বেগকে প্রকাশ করে। তাঁর মতে, বাংলাদেশে হিন্দু ও খ্রিষ্টান ও অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর হামলা দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য বিপদজ্জনক।
ট্রাম্পের এই বক্তব্য বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের হিন্দু, খ্রিষ্টান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা ট্রাম্পের এই নিন্দাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন হিসেবে দেখছেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে, আন্তর্জাতিক সমর্থন তাদের নিরাপত্তার জন্য একটি আশ্বাস এবং এই ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া হিসেবে কাজ করবে।
তবে, ট্রাম্পের বক্তব্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, তিনি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সমালোচনা করেছেন। তিনি হ্যারিসের নীতিগুলোকে কঠোর এবং ব্যবসায়িক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করেছেন।
দেশের সংখ্যালঘুরা মনে করছে, ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার বিষয়টি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বড় আলোচনা কেন্দ্র তৈরি করতে পারে। আন্তর্জাতিক নেতাদের মধ্যে এই ধরনের উদ্বেগ ও সমালোচনা বাংলাদেশের সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের প্রশাসন যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসে, তবে এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ একটি অস্থিতিশীল দেশ হিসেবে চিহ্নিত হবে।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আশা করে শুধু ট্রাম্পের বক্তব্যই নয়, বরং আন্তর্জাতিক সমাজের অন্যান্য সদস্যদেরও এই ধরনের ঘটনাবলীর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা উচিত। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উচিত বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করা।
সার্বিকভাবে, ট্রাম্পের বক্তব্য বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু তৈরি করছে। যদি এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের বর্তমান ইউনূস প্রমাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তবে এর প্রভাব বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে। বাংলাদেশর বর্তমান ইনুনূস সরকারের উচিত এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে আন্তরিকতা এবং কঠোরতা নিয়ে কাজ করা, যাতে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত হয়।