করল সুমঙ্গল বিহার। চট্টগ্রাম জেলার দক্ষিণাংশে পটিয়া থানায় ১৪ নং ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডে আনুমানিক দু’শত বৎসর পূর্বে প্রখ্যাত হারাধন মহাস্থবির ৬০ শতক ভিটার উপর এ বিহারটি প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে বাঁশের বেড়া ও টিনের ছাউনিতে বর্মী শৈল্পিক অনুকরণে অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর ও অনুপমভাবে এ বিহারটি প্রতিষ্ঠা করা হয় যা জনগণের মনে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীকালে ১৯০০ সালে প্রখ্যাত ভিক্ষু প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির এ বিহারটি পুনঃসংস্কার করেন এবং ২ ইঞ্চি থেকে ৫ ইঞ্চি পুরু মাটির দেওয়াল এবং টিনের ছাউনিতে সাদাসিদাভাবেই বিহাটির সংস্কার করেন পরবর্তী পাঁচ বৎসর এ বিহারের অধ্যক্ষরুপে অবস্থান করেন। তৎপর ১৯০৫ সাল হতে ক্রমান্বয়ে ৬৫ বৎসর প্রখ্যাত বৌদ্ধ ভিক্ষু ও সাধক শ্রীমৎ অগ্রলঙ্কার মহাস্থবির এ বিহারের অধ্যক্ষরুপে অবস্থান করেন। তাঁর মৃত্যুর পর ১৯৭০ সালের শেষের দিকে অধ্যক্ষরুপে মনোনীত হন বিবেকানন্দ ভিক্ষু, তিনি ১৯৮১ সাল পর্যন্ত এ বিহারে অবস্থান করেন। তৎপর সোমানন্দ ভিক্ষু ১৯৮৪ সালের ডিসেম্বর অবধি অবস্থানের পর ১৯৮৫ সালের প্রথম দিক হতে মোক্ষপাল ভিক্ষু এ বিহারে অবস্থান করছেন।
বিহারাভ্যন্তরের প্রধান কক্ষে ২ ইঞ্চি থেকে ৮ ইঞ্চি উঁচু ৭ ইঞ্চি দ্ধ ৪ ইঞ্চি ফুট আয়তাকৃতির বেদীর উপর ৪ ইঞ্চি থেকে ৯ ইঞ্চি উচ্চতাবিশিষ্ট ভূমিস্পর্শ মুদ্রায় বুদ্ধের বৃহৎ ব্রোঞ্জ মূর্তিটি আসীন এ বৃহৎ মূর্তিটির উপর পার্শ্বের অপেক্ষাকৃত আরও ক্ষুদ্রাকৃতির ব্রোঞ্জ ও শ্বেতপাথরের ভূমিস্পর্শ মুদ্রায় আসীন দশটি বুদ্ধ মূর্তি আছে।
বিহারাঙ্গিনায় ১৮ ফুট উঁচু ৬ দ্ধ ৬ বর্গাকৃতির একটি মন্দিরগাত্রে শ্বেত পাথরের শিলালিপিতে উল্লেখ আছে যে, ১২৭৭ মগাব্দে (১৯১৫ খ্রিঃ) স্থানীয় প্রবীণ সমাজহিতেষী ডাঃ যুবরাজ কর্তৃক বৌদ্ধ তীর্থ কুশীনগর হতে আনীত পবিত্র বুদ্ধ ধাতুর (অস্থি) উপর ধাতু মন্দির নির্মাণ করা হয়। তবে বর্তমান বিহারাধ্যক্ষ জানান, এ পবিত্র বুদ্ধ ধাতু আনায়নের ব্যাপারে ডাঃ যুবরাজের সংগে ভবানীমোহন বড়ুয়া (কেরানী) ও মথুরানাথ তালুকদার উভয়ে সম্পৃক্ত ছিলেন। এছাড়াও বর্তমান বিহারাধ্যক্ষের নিকট আরও ৬ খ- পবিত্র বুদ্ধ ধাতু আছে বলে তিনি জানান।
ধর্মীয় শিক্ষাদানের কোন ব্যবস্থা এ বিহারে দেখা যায়নি তবে বর্মী ও সিংহলী হরফের সমগ্র ত্রিপিটসহ ধর্মীয় ও সাহিত্যের বিভিন্ন গ্রন্থ আছে। গ্রন্থ সংখ্যা ৮৫০ টি।
প্রকাশক ও সম্পাদক, ধম্মইনফো-ডট-কম