২০২৪ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান, যা ‘জুলাই বিপ্লব’ নামে পরিচিত, বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণের বিপুল সমর্থন পেয়েছিল। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই দাবি করছেন, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ার প্রতিশ্রুতির আড়ালে মূলত প্রতারণা করা হয়েছে।
প্রতারণার অভিযোগ কেন?
অভ্যুত্থানের সময় সমতা, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ, ভিন্নম, ধর্ম ও সংখ্যালঘুদের ওপর দমন-পীড়ন এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর হামলা বেড়েছে। প্রতারণা শব্দটি এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে, কারণ বৈষম্যহীনতার বদলে বৈষম্য আরও গভীর হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিশ্রুতি বনাম বাস্তবতা: প্রতারণা কোথায়?
জুলাই বিপ্লবের পর জনগণ আশা করেছিল, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিত হবে। তবে, ভিন্নমতের প্রতি সহনশীলতা এবং বাকস্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছে। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পাঁচই আগস্টের পটপরিবর্তনের পরও ভিন্নমতের ওপর হামলা অব্যাহত রয়েছে। এতে প্রতারণার অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে।
বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি কি প্রতারণা ছিল?
সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করলেও, অনেকেই মনে করছেন এটি প্রতারণার অংশ। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের প্রতিশ্রুতি পূরণের বদলে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রতারণার পরিণতি ও জনমত
বৈষম্যহীনতার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত না হওয়ায় জনগণের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতারণা নিয়ে সমালোচনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতারণা যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে।
বিশ্লেষণ ও উপসংহার
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখা হয়েছিল, তা এখনো পূর্ণতা পায়নি। ভিন্নমতের প্রতি সহনশীলতা ও মানবাধিকার রক্ষায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। সরকারের উচিত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা, যাতে দেশের জনগণ একটি সত্যিকারের বৈষম্যহীন সমাজের সুফল ভোগ করতে পারে।
এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে, বিবিসি বাংলার নিম্নোক্ত ভিডিও প্রতিবেদনটি দেখতে পারেন:

প্রকাশক ও সম্পাদক, ধম্মইনফো-ডট-কম