নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসে একটি বৌদ্ধ বিহারে বুধবার ভোরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। ব্রঙ্কসের ট্রেমন্ট এলাকার অ্যান্থনি এভিনিউতে অবস্থিত ইউএসএ বুদ্ধায়ারাম বিহার ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্রঙ্কসের প্রথম থাই বৌদ্ধ বিহার। এই বিহারে ভিক্ষু ও স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য একত্রিত হতেন।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিহারেরমূল উপাসনালয়ের পাশে অবস্থিত দ্বিতীয় তলার বাসস্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুইজনের মরদেহ। সংবাদ মাধ্যমকে বিহারের কোষাধ্যক্ষ মাইউরী শ্রীফিরোমের জানিয়েছেন, নিহতদের একজন ছিলেন বয়স্ক ভিক্ষু এবং অপরজন বিহার পরিদর্শনে আসা একজন স্থানীয় ব্যক্তি।
ফায়ার সার্ভিসের তদন্তে জানা যায়, বাসভবনের বসার ঘরে জ্বালানি পদার্থের খুব কাছাকাছি স্থাপিত স্পেস হিটারের কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়। শীতকালে স্পেস হিটারের সঠিক ব্যবহার না করার কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি সম্পর্কে এফডিএনওয়াই দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করে আসছে।
দমকল বাহিনীর কাজে বাধা
ভোর ৬টার পরপরই আগুন লাগার খবর পেয়ে নিউইয়র্ক সিটির ফায়ার ডিপার্টমেন্ট (এফডিএনওয়াই) ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে নিকটবর্তী অগ্নিনির্বাপণ হাইড্র্যান্টের সামনে বেআইনিভাবে পার্ক করা একটি গাড়ির কারণে পানি সরবরাহে বিলম্ব হয়, যা অগ্নিনির্বাপণে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।
এফডিএনওয়াই-এর প্রধান জন এসপোজিটো বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, নিকটস্থ হাইড্র্যান্টের সামনে একটি গাড়ি পার্ক করা ছিল। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে শহরের বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনা একাধিকবার দেখা গেছে। আমরা সবাই জানি যে অগ্নিনির্বাপণ হাইড্র্যান্টের সামনে পার্ক করা উচিত নয়, কারণ এতে আমাদের কাজের গতি কমে যায়।”
গাড়ির মালিক স্থানীয় গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় অপরাধ স্বীকার করেন, তবে উপযুক্ত পার্কিং স্থানের অভাবকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, “আমরা জানি এটি উচিত নয়, তবে আর কোথায় পার্ক করব? এই রাস্তাগুলিতে ডাবল পার্কিং করাও সম্ভব নয়, কারণ সেগুলি খুবই সংকীর্ণ।”
জানা গেছে, আগের মঙ্গলবার গাড়িটি ‘বুট’ করা হয়েছিল, যার ফলে এটি সরানো সম্ভব ছিল না।
থাই সম্প্রদায়ের বিহার পুনর্গঠনের অঙ্গীকার
এই ট্র্যাজেডি স্থানীয় থাই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্য একটি বড় ধাক্কা হলেও, বিহার পুনর্নির্মাণের জন্য তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। বিহারটি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় চর্চা ও সাংস্কৃতিক মিলনস্থল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
মাইউরী শ্রীফিরোম বলেন, “এটি একটি ভয়াবহ বিপর্যয়, তবে আমরা সাধ্যমত বিহারটি পুননির্মানের চেষ্টা করব। সমস্ত থাই সম্প্রদায় একত্রিত হবে এবং সারা বিশ্ব থেকে যে যেভাবে পারবে সাহায্য করবে।”

প্রকাশক ও সম্পাদক, ধম্মইনফো-ডট-কম
আমি খুব মর্মাহত কারণ বুদ্ধ বিহারে হঠাৎ আগুন লাগার জন্য।