জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের অফিস (ওএইচসিএইচআর) গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে ৫ আগস্টের পর সংঘটিত সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত সন্ত্রাসের ঘটনাগুলিও উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ও পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের উপর নির্যাতন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলেও, বাস্তবে ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে তা প্রমাণ করে। ইসলামী মতদর্শী ইউনূস প্রশাসন এইসব হামলার কথা অস্বীকার এবং বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যমেও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী নির্যাতন, হামলা-মানবাধিকার লঙ্গনের খবর প্রকাশ না করলেও, জাতিসংঘের তদন্ত দল তাদের প্রতিবেদনে এই ধরনের হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
৫ আগস্টের আগে সরকারি বাহিনীগুলোর অত্যাচার নিয়ে কোনো সংশয় না থাকলেও, ৫ আগস্টের পর হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের উপর যে সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত সন্ত্রাস হয়েছে, সেটি নিয়ে সরকার এবং বিভিন্ন মহল অস্বীকারের নীতি গ্রহণ করে আসছে। তবে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে সেই অস্বীকৃতিকে ভুল প্রমাণিত করা হয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সূত্র অনুযায়ী, ৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংখ্যালঘুদের উপর ৩৭টি সহিংস হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী ও হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও রয়েছে। এছাড়া, আহমদিয়া মুসলিম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫ আগস্টের পর সংঘটিত সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত সন্ত্রাসের ঘটনাগুলি নিয়ে সরকার ও অন্যান্য মহল যে অস্বীকার করেছে, তা সঠিক ছিল না। জাতিসংঘের তদন্ত দল বাস্তব চিত্র তুলে ধরে বলেছে, এই ঘটনাগুলি শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘনই নয়, বরং দেশের সামাজিক কাঠামো, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এবং ভবিষ্যৎ সংহতির জন্য বড় হুমকি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে:
- হিন্দুদের উপর নির্যাতন: বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং ভাঙচুর।
- আহমদিয়া মুসলিমদের উপর হামলা: উপাসনালয়ে হামলা এবং সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা।
- আদিবাসীদের উপর নির্যাতন: ভূমি দখল, শারীরিক নির্যাতন এবং সামাজিক বঞ্চনা।
প্রতিবেদনে সংখ্যালঘু নির্যাতনের পাশাপাশি সাংবাদিক ও সিভিল সোসাইটি মেম্বারদের উপরও হামলার তথ্য উঠে এসেছে। অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, হুমকি এবং শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, যা স্বাধীন মতপ্রকাশের উপর বড় আঘাত।
জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনের পর বর্তমান ইউনূস প্রশাসন এবং অন্যান্য মহল জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনের শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীঘ ঘটনা সমূহ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করলেও বাংলাদেশর সংখ্যালঘুদের উপর, বিশেষ করে হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম এবং আদিবাসীদের উপর হামলার ঘটনা নিয়ে জাতিসংঘের মূল্যায়ন উপেক্ষা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের অফিস (ওএইচসিএইচআর) কর্তৃক প্রকাশি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পড়ুন এখানে.

প্রকাশক ও সম্পাদক, ধম্মইনফো-ডট-কম