বড়ুয়া জয়ের প্রবন্ধটি পণ্ডিত জ্যোতিঃপাল মহাথেরোর মুক্তিযুদ্ধে অবদানকে গভীরভাবে পর্যালোচনা করেছে এবং এটি বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। লেখক অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে মহাথেরের জীবন, কর্ম এবং মুক্তিযুদ্ধে তাঁর সরাসরি ও পরোক্ষ ভূমিকার বিশদ বিবরণ উপস্থাপন করেছেন।
গবেষণায় পণ্ডিত জ্যোতিঃপাল মহাথেরের অসাম্প্রদায়িক মানসিকতা, বৌদ্ধ ধর্মের অহিংসার আদর্শে থেকে দেশের মুক্তিসংগ্রামে তাঁর অবদান এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের প্রচেষ্টা চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। লেখক দেখিয়েছেন, কীভাবে মহাথের মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়দান, নিরাপত্তা প্রদান এবং দেশ-বিদেশে বৌদ্ধ সমাজকে সংগঠিত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সহায়তা করেছিলেন।
গবেষণায় মহাথেরের শিক্ষামূলক, সাহিত্যিক এবং মানবিক কাজগুলোকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যা তাঁকে শুধু মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নয়, বরং সমাজ সংস্কারক এবং সর্বজনশ্রদ্ধেয় একটি ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। লেখক তাঁর জীবনের নানা দিক যেমন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা, সাহিত্য রচনা এবং ধর্মীয় নেতৃত্বের বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন, যা গবেষণার বিষয়বস্তুকে বহুমাত্রিক করেছে।
গবেষণাটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো লেখকের তথ্য-উপাত্তের যথাযথ ব্যবহার। ভিক্ষু সুনীথানন্দের গ্রন্থসহ প্রাসঙ্গিক উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে লেখক প্রবন্ধটিকে প্রামাণ্য ও সমৃদ্ধ করেছেন। তবে, প্রবন্ধটিতে মহাথেরের কর্মের আন্তর্জাতিক প্রভাব এবং তাঁর কাজের দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল নিয়ে আরও বিশ্লেষণ সংযুক্ত হলে এটি আরও পূর্ণাঙ্গ হতে পারত।
সর্বোপরি, বড়ুয়া জয়ের এই গবেষণা মুক্তিযুদ্ধে পণ্ডিত জ্যোতিঃপাল মহাথেরোর অবদানকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাঁর স্থানকে তুলে ধরেছে। এটি ভবিষ্যৎ গবেষণার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। – ধম্মবিরীয় ভিক্ষু, প্রকাশক ও সম্পাদক, ধম্মইনফো।
আমেরিকা প্রবাসী উৎস বড়ুয়া জয়, বিএ (অনার্স), এমএ, পিজিডি, এমফিল, প্রাবন্ধকি, গবেষক।