রক্তাক্ত যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসের সাথের এদেশের বৌদ্ধরাও জড়িত। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোরনের কর্ম ধারাকে অব্যাহত রেখে রাঙালি বৌদ্ধসম্প্রদায় পাক আমলে এদশের সকল গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। কৃষক আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলন ও ৬ দফা আন্দোলনসহ ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান এবং একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলনে বৌদ্ধরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিল।এ কারণে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ এবং তৎপরবর্তীকালে পাক সেনা ও তাদের দোসরদের জঘন্য আক্রমণ থেকে বৌদ্ধরা রেহাই পায়নি। লুণ্ঠন, ধর্ষণ ও অগ্নি সংযোগের হাত থেকে বৌদ্ধরা রক্ষা পায়নি। বৌদ্ধ গ্রাম ও বৌদ্ধ বিহার আক্রান্ত হয়েছে, বুদ্ধ মুর্তি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে এবং অনেক বৌদ্ধ বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।বৌদ্ধ ভিক্ষুদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে। বৃদ্ধ সংঘরাজ অভয়তিষ্য মহাথেরও এ নির্যাতন থেকে রেহাই পাননি। অনেক বৌদ্ধ বিহার ও বৌদ্ধ গ্রাম লুণ্ঠিত হয়েছে। কোন কোন স্থানে মেয়েদের সম্ভ্রম লুণ্ঠিত হয়েছে। এ সময় কেহ কেহ প্রাণভয়ে মিয়ানমার ও ভারতে আশ্রয় গ্রহণ নেয়।কিন্তু এর মাঝেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আহ্বানে বৌদ্ধরা কোনো কোনো গ্রামে দুর্বার প্ররোধ গড়ে তোলে। তন্মধ্যে রাউজান থানার আবুরখীল গ্রামের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আবুরখীল গ্রামের বহু হিন্দু নরনারী আশ্রয় নেয়। এ গ্রাম থেকে মদুনাঘাট, ঘোলশহর ও কালুঘাট ইপআর বাহিনীর ও মুক্তি যোদ্ধাদের খাদ্য সরবরাহ করা হয়্ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা সহায়ক সমিতি গঠন করা হয়্ এ গ্রামের লোকেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তি যোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং মিনি হাসপাতাল স্থাপন করে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করতেন। এয়ার মার্শাল সুলতান মাহমুদের ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান এই গ্রামেই মহীদ হন- এবং তাকে এখানেই কবর দেয়া হয়। স্বধীনতার পর এয়ার মার্শাল সুলতান মাহমুদ ছোট ভাইয়ের কবর জিয়ারতের জন্য আবুরখীল আগমন করেন।
আবুরখীলে ক্যাপ্টেন সুলতান মাহমুদ তার দলবল নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। এ গ্রামে অবস্থান গ্রহণ করে মুক্তিযোদ্ধা রুমী, রশ্মি, কামাল, ইদ্রিস, মোজাম্মেল, চিত্ত ও কেদার বিভিন্ন দিকে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। সেপ্তেম্বর মাসে আবুরখীলের কেরানীহাটে রাজাকারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘর্ষ হয়। এতে অনেক রাজাকার মারা যায়। এ যুদ্ধে বিকাশ বড়ুয়া শহীদ হন।
আবুরখীল ছাড়াও বৌদ্ধ গ্রাম পাহড়তলী, পদুয়া গ্রামে প্রতিরোধ তৎপরতা দেখা যায়। পদুয়ার জঙ্গলে স্থাপিত হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম ঘাঁটি। পাহাড়তলী গ্রামের তালতলী পাহাড় ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম রিক্রুটিং ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।সঙ্গীতাচার্য জগদানন্দ বড়ুয়া এ কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তাঁর সাথে পাহাড়তলী গ্রমের সাহসী যুবকেরা কাজ করেছিল। রাগুনিয়া থানার বেতাগী গ্রামের বৌদ্ধ পল্লীতে ক্যাপ্টেন করিম ও ক্যাপ্টেন আলম আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিরেন। এই গ্রামের ডাঃ কিরণচন্দ্র বড়ুয়া আহতদের চিকিৎসা করতেন। হাজারীর চর গ্রামের ডাঃ চারুচন্দ্র বড়ুয়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতেন। রাউজানের আর্যম্রিত ইনস্টিটিউশন ছিল শরণার্থী ও মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ট্রানজিট ক্যাম্প। এভাবে বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে বৌদ্ধরা প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং এদশের বৌদ্ধ গ্রামগুলিতে মুক্তিবাহিনীর আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে উঠে। প্রতিটি বৌদ্ধ গ্রামের অপেক্সাকৃত তরুণ বৌদ্ধ ছেলেরা মুক্তিবাহিনীতে যোগদান করে এবাং মুক্তি যুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখে।
কক্সবাজার জেলার রামু, কক্সবাজার, পালং ও উখিয়ার বৌদ্ধ গ্রামগুলিতে পাকবাহিনী ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। ১৯৭১ সনের এপ্রিল মে মাসে পাকবাহনী রামুর একাধিক মহজন বাড়ি, কক্সবাজার শহরের প্রখ্যাত হেডমাস্টার অমিয়কুমার বড়ুয়া, অমিতশ্রী বড়ুয়া ও সঞ্জয়বড়ুয়াদের বাড়ি এবঙ রত্না পালং এর আম্বিকা চরণ বড়ুয়া,সাবেক ডেপুটি ম্যজিস্ট্রেট ধনজ্ঞয় বড়ুয়ার বাড়ি, অনিন্দ কুমার বড়ুয়ার বাড়ি এবং ভালুকয়া পালং এর যোগেন্দ সিকদারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন। কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানার দীপক বড়ুয়া প্রথমদিকে পাকসেনাদের গুলিতে নিহত হন। তিনি একাত্তরে চট্টগ্রামে প্রথম শহীদ বলে জানা যায়। উখিয়া থানার রুমখা পালং গ্রামের ভট্ট বড়ুয়াকে হাত পা বেঁধে পাকবাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে। কক্সবাজার জেলার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হক, মোস্তাক আহমেদ, এডভোকেট আহমেদ হোসেন, শমসের আলম চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতৃবর্গ, সংসদ সদস্য সরওয়ার ওসমান চৌধুরী (বর্তমানে আবু দুবাইর রাষ্ট্র দূত), সাবেক ইপিআর সদস্য,পুলিশ বাহিনীর সদস্য ও স্থানীয় যুবকদের সাথে বৌদ্ধরা পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারে আশ্রয় গ্রহণ করে। লেখক তখন নোয়াখালি সরকারী কলেজের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্দুর আহ্বানে স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদানের উদ্দেশ্যে তিনি অন্যান্য মুক্তি যোদ্ধাদের সাথে মিয়ানমারে মিলিত হন এবাং স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। কালুর ঘাট যুদ্ধে আহত ক্যাপ্টেন হারুনকে আহত অবস্থায় মিয়ানমারে আনয়ন করে চিকিৎসা করান হয়্ পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারে তখন প্রায় ৫০ হাজারের মতো শরনার্থী আশ্রয় নিয়েছিল। বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে গভীর জঙ্গলে মিয়ানমারে আশ্রয় গ্রহণকারী ইপিআর, পুলিশ, ছাত্র যুবক মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে স্থানীয় বৌদ্ধ যুবকেরা মিলিত হয় ও সংগঠিত হয় এবং একের পর এক মুক্তিযুদ্ধে সত্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।উখিয়া থানার ভালুকিয়া পালং এর জমিদার যোগেন্দ্র লাল সিকদার ৫০জন মুক্তিযোদ্ধাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। কক্সবাজার জেলার বৌদ্ধ মুক্তি যোদ্ধাদের মধ্যে সুরক্থিত, পরিমল, জয়সেন, সুনীল, ধীমান, অরবিন্দ, উদয়ন, মিলন, দিলীপ, রমেশ, আশীষ, কৃষ্ণপ্রসাদ ও খোকার না বিশেষ উল্লেখযোগ্য। লেখকক জিতেন্দ্রলাল বড়ুয়া তখন মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম সংগঠক ও সমন্বযকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করায় এবং সরকারী চাকুরীতে যোগদান না করায় পাক সরকার তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করেন।
প্রণব কুমার বড়ুয়া তাঁর “মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি বৌদ্ধ সম্প্রদায়” গ্রন্থের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে মুক্তি সংগ্রামের অংশগ্রহণকরী ৪৮ জন বৌদ্ধ শহীদের পরিচয় লিপিবদ্ধ করেছেন।এ অনুচ্ছেদে তিনি ৩৫ জন বিশিষ্ট বৌদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেন। তাছাড়া এ গ্রন্থে তিনি জেলা ওয়ারী বৌদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা প্রদান করেন তাতে দেখা যায় চট্টগ্রাম জেলায় ২৩২, কক্সবাজার জেলায় ১২, নোয়াখালি জেলায় ৩২, কুমিল্লা জেরায় ১, খাগড়াছড়ি জেরায় ২, বান্দরবান জেলায় ১ জনের নাম দেখা যায়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বৌদ্ধদের অনেক অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নিয়ে অফিস আদালত ও চাকুরীতে যোগদান থেকে বিরত ছিরেন্ অনেকে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিরেন এবং প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন পূর্বক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছিলেন। তাঁরা ভারতের বিভিন্ন স্থানে সবায় ভাষণ দিয়েছেন, মুক্তি যুদ্ধের কথা বলেছেন এবং পাক সেনাদের অত্যাচারের চিত্র তুরে ধরেন। অনেকে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সাথে ও বুদ্ধিজীবীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন।বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মধ্যে জ্যেতিপাল মহাথের, কুমিল্লার ধর্মরক্ষিত ভিক্ষু, সংঘ রক্ষিত ভিক্ষু, পূর্ণানন্দ মহাথের ও চট্টগ্রামের শান্তপদ মহাথের স্বাধীনতার স্বপক্ষে জনমত গড়ে তোলার জন্য ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন।পণ্ডিত জ্যেতিপাল মহাথেরো।অনেকের মত তিনি বেদেশে মুজিব নগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিকের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।প্রবাসী সরকার কর্তৃক পণ্ডিত জ্যোতিপাল মহাথের এবং তাঁর সঙ্গী অ্যাডভোকেট ফকির সাহাবুদ্দিন বৌদ্ধ রাষ্ট্র শ্রীলংকার বিভিন্ন স্থানে প্রচারণাসহ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মিসেস বন্দর নায়েকের সাথে সাক্ষাৎ করে অস্ত্রবাহী পাকিস্তানি বিমানের করম্বো হয়ে ঢাকা যাতায়াত বন্ধ করান। এছাড়া থাইল্যান্ড, জাপান ভ্রমণ করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন।
প্রণোদিত বড়ুয়া, বিপ্রদাশ বড়ুয়া, সুব্রত বড়ুয়া ও রনধীর বড়ুয়া স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। পার্থ প্রতিম বড়ুয়া ভারতে সাপ্তাহিক অমর বাংলা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেন। বিপ্লব বড়ুয়া নামে আরেকজন সাহিত্যিক বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত ছিরেন বলে জানা যায়। তাঁর প্রচারিত কথিকা মুক্তাঞ্ঝলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময প্রচারিত হয় বরে স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রের ৫ম খণ্ডে বর্ণিত আছে।
বাংলাদেমের অভ্যন্তরে আরেকজন বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘনায়ক বিশুদ্ধানন্দ মহাথের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে অনন্য ভুমিকা রাখেন। মুক্তি সংগ্রাম চলাকালে বিশুদ্ধানন্দ মহাথের বৌদ্ধদের জানমাল রক্ষার জন্য ব্যাপকভাবে বৌদ্ধ অধ্যুষিত গ্রামগুলি সফর করেন। তিনি এ সময় প্রায় ১২ হাজার মাইল ভ্রমণ করেন এবাং বৌদ্ধ, হিন্দু ও মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মরক্ষার জন্য ৭০ হাজার পরিচয় পত্র প্রদান করেন। বৌদ্ধ হিসেবে এই পরিচয় পত্র নিয়ে অনেক অবৌদ্ধ যুবক সামরিক শাসকদের ফাঁকি দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে আশ্রয় নিয়ে মুক্তি সংগ্রামে যোগ দিয়েছিল। অনেক হিন্দু পরিবার নিরাপদে সীমান্ত অতিক্রম করেছিল। তিনি সে সময় অনেক হিন্দু পরিবারকে ধর্মান্তর থেকে রক্ষা করেন। জনৈক কমাণ্ডারসহ পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধাকে তিনি ঢাকা ধর্মরজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে আশ্রয় দিয়েছিলেন।মহাথের ঢাকার কমলাপুর, সবুজরাগ, ঠাকুরপাড়া, আহমদবাগ এলাকার জনগনকে পাকসেনাদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছিলেন। মানীয় মহাথের স্বদেশে অবস্থান পূর্বক মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা প্রদান করেছেন।
[বাংলাদেশে বৌদ্ধ ধর্ম ও বৌদ্ধ সম্প্রদায় গ্রন্থের অংশ বিশেষ। –ধম্মইনফো।
বাংলাদেশে শিক্ষা জগতে প্রফেসর ড. জিতেন্দ্র লাল বড়ুয়া একটি বহুল পরিচিত নাম। ১৯৯৫ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ অধ্যাপক এবং ২০০২ সালে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার থেকে দু’বার স্বর্ণপদক প্রদান করেন। ২০০০ সালেও তিনি মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে সম্মান লাভ করেন। তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক এবং একাধিক সরকারি কলেজে প্রায় দশ বছর যাবত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯৭০ সালে সরকারি কলেজে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজ, ঝালকাঠি সরকারি কলেজ, করটিয়া সাদত কলেজ, জগন্নাথ কলেজ, নেত্রকোনা সরকারি কলেজ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, হরগঙ্গা সরকারি কলেজ ও নরসিংদী সরকারি কলেজে বিভিন্ন পদে বিভিন্ন মেয়াদে সুনামের সঙ্গে চাকরি করেন।
প্রফেসর বড়ুয়া কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানার রুমখাপালং গ্রামে ১৯৪৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে তিনি স্থানীয় পালং মডেল হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিকম (অনার্স) ও এম.কম ডিগ্রি লাভ করেন। অতঃপর ২০০৪ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি ২০১২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
বৌদ্ধ ধর্মদর্শন, ইতিহাস, বীমা ও হিসাববিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ে তার একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া, তিনি একজন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও গবেষক। তিনি অ্যামিয়াটিক সোসাইটি ও বাংলা একাডেমির জীবন সদস্য। International Association for the Future of Humanity নামক আন্তর্জাতিক সংস্থারও তিনি জীবন সদস্য। দেশের একাধিক ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত।