আজ, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে ৩ জন নিরীহ গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন গর্ভবতী মহিলা রয়েছেন। নিহতরা হলেন উপা পেনকুপা (৭২), মেসি ভানলাইনা (১৯) ও এলেই ভানজিরপারি।
সুত্র মতে, দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীর ভয়ে এলাকার নিরীহ গ্রামবাসী বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে আশ্রয় ছিলো। আজ সকালে সেনাবাহিনী কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ)-এর বিরুদ্ধে অভিযানের নামে নিরীহ গ্রামবাসীর উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ শুরু করে। প্রাণভয়ে নিরীহ স্থানীয়রা বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এইসময় অভিযানের নামে নিরীহ গ্রামবাসীদের খুঁজে বের করে ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয় নিরীহ ৩ জন বম আদিবাসীকে।
মানবাধিকারের লঙ্ঘন
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই কর্মকাণ্ড পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের প্রতি দীর্ঘদিনের নিপীড়নের ধারাবাহিক অংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেনাবাহিনী কেএনএ দমনের নামে আদিবাসীদের উপর যে অত্যাচার চালাচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ অনুযায়ী গুরুতর অপরাধ। গুলিবর্ষণ, নিরীহ মানুষকে হত্যা এবং তাদের বসতবাড়ি ধ্বংস করা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের দাবি
কুকি-চিন জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছে। তাদের মতে, এসব হত্যা ও নিপীড়ন পরিকল্পিতভাবে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করার একটি কৌশল। অতীতে এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবিকভাবে কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি সরকার প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
নতুন করে এই হত্যাকন্ডের ঘটনায় দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানে আবারও গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরীহ জনগণের উপর সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান শুধু মানবাধিকারের লঙ্ঘন নয়, বরং আদিবাসীদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, যেন আদিবাসীদের অধিকার এবং জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।