বাঘাইছড়ি উপজেলার কজইছড়ি সেনাক্যাম্পের কমান্ডার লেঃ ফেরদৌস (সম্পূর্ণ নাম মো: ফেরদৌস কায়ছার খান) এর নেতৃত্বে ১৯৯৬ এর মধ্য রাতে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার নিউলাল্যাঘোনা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তিনি নির্মমভ পাশবিক কায়দায় অপহরণের শিকার হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী কল্পনা চাকমাকে অপহরণের মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। ২৮ বছর আগের ওই ঘটনায় বাদীর তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করে মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত।
মঙ্গলবার ( ২৩ এপ্রিল, ২০২৪) রাঙামাটির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমা বেগম মুক্তা এ আদেশ দেন।
কল্পনা চাকমা অপহৃত হলেও কে বা কারা করেছে তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, বলে দেয়া চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনই বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন কল্পনার ভাই কালিন্দী কুমার চাকমার আইনজীবী সুস্মিতা চাকমা।
নারাজি আবেদন নামঞ্জুরের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সিদ্ধান্তও আলোচনা করে পরে বাদী পক্ষ নেবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী সুস্মিতা।
১৯৯৬ সালের ১১ জুন রাতে বাঘাইছড়ি থানার নিউ লাল্যাঘোনা থেকে রাষ্ট্র কর্তৃক অপহরণ করা হয় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনা চাকমা। সেসময় তিনি সংগঠনটির অর্গানাইজিং সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করতেন। কল্পনা চাকমার পরিবার শুরু থেকেই সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যকে এই অপহরণের জন্য দায়ী করে আসছেন।
২০১০ সালের ২১ মে পুলিশ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দেয়। তখন মামলার বাদী ও অপহৃতার বড় ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা তা প্রত্যাখ্যান করে ঘটনার পুনঃতদন্তের দাবি করেন।
২০১৬ সালে আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করে রাঙামাটির ওই সময়কার পুলিশ সুপার সৈয়দ তারিকুল হাসানকে এ মামলার তদন্তভার দেন। তিনি দুই বছর পর ২০১৮ সালে কারও বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ার তথ্য জানিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ প্রতিবেদনেও সেসময় নারাজি দিয়েছিলেন কল্পনার ভাই।
২০১৮ সালে মামলার বাদী কালিন্দী চাকমা আদালতে জেলা পুলিশ সুপারের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি আবেদন করে পুনঃতদন্ত চেয়েছিলেন। সেই আবেদনটিই নামঞ্জুর করা হয়েছে মঙ্গলবার।
আদেশের পর কালিন্দী চাকমা বলেন, অপহরণের ২৮ বছর পরে এই আদেশ দুঃখজনক। আমি আশা করেছিলাম, ন্যায়বিচার পাবো। কিন্তু এই আদেশে হতাশ। আমি উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচারের জন্য আবেদন করবো।
আদালত পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সহযোগী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন। গতকাল সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্য এন্টি চাকমা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আদালতের মাধ্যমে পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ পক্ষপাতদুষ্ট ও চিহ্নিত অপহরণকারীদের দায়মুক্তি দেওয়ার ন্যক্কারজনক নজির, যা কারও কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। এমন পক্ষপাতদুষ্ট পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতিবাদী জনতা লড়াই চালিয়ে যাবে।
স্বপ্ন এবং দায়িত্ববোধ থেকে ধম্মইনফো-ডট-কম এর সূচনা। ২০১১ সালে বাংলায় প্রথম অনলাইন বৌদ্ধ সংবাদ পোর্টাল হিসেবে ধম্মইনফো যাত্রা শুরু করে, যা বৌদ্ধধর্ম, ইতিহাস, সংস্কৃতি, এবং নীতিমালা সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রচারে পাঠকের ব্যাপক গ্রহণ যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা লাভ করে। ২০১২ সালে রামুতে মৌলবাদী হামলার পর এটি একটি শক্তিশালী সংবাদ মাধ্যম হিসেবে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তর বাংলা ভাষী বৌদ্ধদের কাছে পরিচিতি লাভ করে। যদিও নিরাপত্তাজনিত কারণে ২০১৮ সালে সাইটটি প্রকাশনা বন্ধ করা হয়, ২০২৪ সালে ধম্মবিরীয় ভিক্ষুর নেতৃত্বে এটি আবার চালু হলে ধম্মইনফো বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার, বাংলাদেশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে সংবাদ, ঐতিহাসিক নিদর্শন, মণিষীদের জীবনী প্রকাশ, এবং ধর্মীয় উন্নয়নে কাজ করছে।