মহেশখালী, কক্সবাজার — কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার উত্তর নলবিলা গ্রামে এক সংখ্যালঘু বৌদ্ধ পরিবারের বসতভিটা দখলের উদ্দেশ্যে হামলা, চাঁদা দাবি এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সুমন বড়ুয়া ও তার পূর্বপুরুষদের শত বছরের পুরনো বসতভিটায় তিনি পরিবারসহ দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি তিনি নিজ বাড়ির কিছু সংস্কারকাজ শুরু করলে প্রতিবেশী মোহাম্মদ রাসেল ওই জমির একটি অংশ তাদের মালিকানা দাবী করে। এ নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত হয়।
সুত্র জানায়, গত ১১ মার্চ বিকেল ৪টার দিকে মোহাম্মদ রাসেলের নেতৃত্বে মোহাম্মদ হাসান হোসাইন, মোহাম্মদ রশিদ আহমেদ, মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ আবু তাহের, মোহাম্মদ মিজান আহমেদ ও মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের একটি দল হঠাৎ সুমন বড়ুয়ার বাড়িতে এসে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয় এবং তাকে ও তার পরিবারকে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।

পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সুমন বড়ুয়া ১৪ মার্চ মহেশখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে, দায়িত্বরত কর্মকর্তা তা গ্রহণ না করে ‘আপোষে মীমাংসা’র পরামর্শ দিয়ে তাকে ফিরিয়ে দেন।
কিন্তু ওইদিন রাত ৮টার সময় অভিযুক্তরা দলবলসহ সুমন বড়ুয়ার বাড়িতে এসে তার পরিবারের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে সুমন বড়ুয়া, তার স্ত্রী ঊষা বড়ুয়া, ছেলে-মেয়ে এবং তাদের রক্ষা করতে আসা প্রতিবেশী অমিয় বড়ুয়া ও অভি বড়ুয়া গুরুতর আহত হন।
সুমন বড়ুয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “হামলার সময় তারা বলছিল, ‘১০ লাখ টাকা দিবি না, তাহলে তোর মেয়েকে তুলে নিয়ে যাব। এখানে থাকতে হলে আমাদের ভাড়া/চাঁদা দিতে হবে, না হলে এখান থেকে এখনই বের হয়ে যা। তোর ছেলে রুপন বড়ুয়া কোথায় বল। না হলে তোদের সবাইকে একজন একজন করে হত্যা করব।” একথা বলেই তারা মারধর করে এবং গুরুতর আঘাত করে। তারা পরিবারের নারী সদস্যদেরও আঘাত করে টেনে-হিঁচড়ে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর তারা বাড়ির কিছু নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়।”
তিনি আরও জানান, তাদের কান্না-চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা তাদের উপরও হামলা করে। এতে প্রতিবেশী অমিয় বড়ুয়া ও অভি বড়ুয়া গুরুতর আহত হন। পরে হামলাকারীরা চলেগেলে স্থানীয়র প্রতিবেশীরা তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান।
এই ঘটনার থানায় মামলা করতে গেলে সুমন বড়ুয়া আবারও বাধার সম্মুখীন হন। তিনি অভিযোগ করছেন, স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপের কারণে পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়।
বর্তমানে সুমন বড়ুয়া ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং ন্যায়বিচার ও আইনি সহায়তার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
