বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে আবারও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় একটি শতবর্ষী বৌদ্ধ বিহারে চুরির ঘটনা দেশব্যাপী বৌদ্ধ ও সংখ্যালঘুদের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত অনুমান ২টার পরে উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের আলোকদিয়া মধ্যমপাড়ায় অবস্থিত ধর্মদুত বৌদ্ধ বিহারে একদল চোর গেইটের তালা ভেঙে প্রবেশ করে। চোরেরা শতবর্ষী অষ্টধাতুর (১০ ইঞ্চি) একটি মূর্তি, ৫টি তামার মূর্তি এবং আইপিএসের দুটি ব্যাটারি নিয়ে যায়। আরও একটি মূর্তি বিহারের মাঠে ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে।
চুরির ঘটনার পর বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শাহ আলম ও সেকেন্ড অফিসার আবদুল্লাহ আল ফারুক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় ধর্মদুত বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সদস্য মিন্টু সিংহ অজ্ঞাত চোরদের বিরুদ্ধে লালমাই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পাশ্ববর্তী শাক্যমনি প্যাগোডার দায়িত্বরত ভিক্ষু প্রজ্ঞাদীপ্তি বলেন, “চুরি হওয়া বৌদ্ধ বিহারটি একশ বছরেরও পুরনো। তবে সেখানে রাতে কোনো ভিক্ষু অবস্থান করেন না। শুধু দিনে ধর্মীয় কার্যক্রম চলে। ধর্মীয় উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
লালমাই থানার ওসি মো: শাহ আলম জানান, “বিহারের পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। চুরি হওয়া মূর্তি উদ্ধারে ও চোরদের শনাক্ত করতে ওই এলাকার কিছু সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে।”
এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এর আগেও দেশে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে চুরির ঘটনা ঘটেছে, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ইঙ্গিত দেয়। বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের উপাসনালয়গুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি হয়ে উঠেছে।
এই চুরির ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রতিফলন। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অব্যাহত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা আর না ঘটে।

প্রকাশক ও সম্পাদক, ধম্মইনফো-ডট-কম