ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে দাবানল একটি সাধারণ ঘটনা হলেও সাম্প্রতিক দাবানলটি ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ। আমেরিকার ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়া একটি, যেটি আয়তনে বাংলাদেশের চেয়ে বড়। ক্যালিফোর্নিয়ার রাজধানী সেক্রেমেন্টো। আমি লং বীচ শহরে থাকি আর লং বীচ শহরের অতি নিকটতম হচ্ছে লস এঞ্জেলেস যা ক্যালিফোনিয়ার একটি সমৃদ্ধশালী শহর। বিশেষত, এই লস এঞ্জেলেস শহরের আশেপাশে দাবানল ছড়িয়ে পরেছে।
আমেরিকার কয়েকিট অঙ্গরাজ্যে তীব্র শীতে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে তুষার ঝড় হলেও ক্যালিফোর্নিয়ার আবহাওয়া মূলত শুষ্ক, যা বাংলাদেশের আবহাওয়ার মতো। শীতকালে কিছু বৃষ্টি হলেও এই বছর এখনো বৃষ্টিপাত হয়নি। শুষ্ক আবহাওয়ার সাথে প্রচণ্ড বাতাস মিলে দাবানলের সূত্রপাত ঘটিয়েছে। এটি এতটাই বিস্তৃত হয়েছে যে আমাদের দেশের রাঙ্গামাটি শহরের পরিমাণ কয়েকটি শহরের সমান জায়গা ইতিমধ্যে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতি সত্ত্বেও ক্যালিফোর্নিয়ার মানুষরা তাদের দৈনন্দিন যার যার কাজে ব্যস্ত। আগুন দেখে বাংলাদেশের মত মোবাইল সাংবাদিক বা উৎসুক জনতা জড়ো হচ্ছে না। এই আগুন-দাবানল কিভাবে মোকাবেলা করবে তা নিয়ে প্রশাসন কাজ করছে, জনগণের প্রতি প্রয়োজনীয় জরুরি নির্দেশনা তাৎক্ষনিক সবার মোবাইলে ম্যাসেজে জানিয়ে দিচ্ছে। জনগণ সেই নির্দেশনা পেয়ে যা করণীয় তা করছে।
কোনো বিশৃঙ্খলা বা অপ্রয়োজনীয় ভিড় নেই। প্রশাসন সুচারুভাবে দাবানল মোকাবেলার কাজ করে যাচ্ছে।
আর দাবানলের ফলে মূলত মিলিয়নিয়ার ও বিলিয়নিয়ারদের ঘরবাড়ি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের এই একটি বাড়ি না তাদের অনেকেরই এরকম মিলিয়ন-বিলিয়ন ডলার দামের একাধিক বাড়ি আছে। এই ধ্বংসের মধ্যেও তাদের জীবনযাত্রায় তেমন প্রভাব পড়বে না। দেখা যাবে, আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ও অবকাঠামো সব পুনরুদ্ধার হবে।
আপসোস: আমাদের দেশে কিছু ধর্মীয় গোঁড়ামীরা প্রকৃতির এই ঘটনাকে অদৃশ্য শক্তির অভিশাপ হিসেবে বিশ্রী উল্লাস করছে। কিন্তু, এখানকার মানুষ বাস্তবতার সাথে জ্ঞান, বিজ্ঞান সমৃদ্ধ অর্থনীতি দিয়ে মোকাবিলা করছে। ধর্মীয় কুসংস্কার বা অসঙ্গত ব্যাখ্যা দিয়ে তারা বিভ্রান্ত নয়। বরং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় তারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর সমাধান খুঁজে বেড় করছে।
আর আমাদের দেশের ধর্মীয় গোড়ামীরা অতি ধার্মীকেরা সেই তাদের গোঁড়া বিশ্বাস নিয়েই পরে থাকবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক, ধম্মইনফো-ডট-কম